in

CryCry AgreeAgree OMGOMG

থার্ড টেম্পল এবং মেসিয়ানিক যুগের সূচনা

Third Temple Al Aqsa Mosjid and Messianic Age

২০০০ বছর পর আমরা কি সেই জেনারেশন যারা আরেকটি টেম্পলের সাক্ষি হতে যাচ্ছি?

স্রোতের বিপরীতে অল্পকিছু বিশ্লেষক পাওয়া যাবে যারা মনে করে মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা থেকে শুরু করে চলমান যুদ্ধ, সংঘাত, মহামারি, দাবানলসহ বৈরি প্রকৃতি ইত্যাদি যত সমস্যা চলছে মোটা দাগে তা একটি মাত্র বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত। সেটি হলো থার্ড টেম্পল।

শুরুতে কয়েকটি প্রশ্ন – আল আকসা মসজিদ ভেঙ্গে থার্ড টেম্পল করা কি খুব সহজ কাজ? এটা কি আদৌ সম্ভব? ভিতরে ভিতরে কি এসব প্রক্রিয়া চলমান নাকি সব প্রপাগান্ডা? পুরো লেখা জুড়ে এসব প্রশ্নের উত্তর খোজার চেষ্টা করা হবে।

মূল পয়েন্টে যাওয়ার আগে একটা ইতিহাসের প্যাচাল আছে আরেকটা ধর্মীয় ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা।

আজ থেকে ২০০০ বছর আগে রোমানদের আক্রমণে সেকেন্ড টেম্পল ধ্বংস হয়েছিল। তখন রোমান সাম্রাজ্যের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে বিশেষ করে সম্রাট নিরোর মৃত্যুর পর রোমানদের বিতারন এবং টেম্পলকে ভিত্তি করে একটি স্বাধীন ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু উল্টা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যায়। এর আগে ৫৮৭/৫৮৬ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে ব্যাবিলিয়নরা ধ্বংস করে ফাস্ট টেম্পল। ধ্বংসাবসেসের একমাত্র অবশিষ্টাংশ হিসেবে একটি প্রাচীর রয়ে যায় যেখানে জিউসরা এখন মাথা ঠুকে ইবাদত করে।

মূসা আ. থেকে শুরু করে ইতিহাস পড়লে তাদের এরকম ধারাবাহিক উন্থান আর পতন লক্ষ্য করার মতো। উন্থানের পরই সব ভুলে আবার অন্যায় অত্যাচারে লিপ্ত হয়ে যায়। যেমন ফেরাউনের হাত থেকে মূসা আ. তাদের উদ্ধার করার পর আবার তারা অপকর্মে লিপ্ত হয়েছিল। মূসা আ. এর মাত্র ৪০ দিনের অনুপস্থিতিতে কিছু বিলম্ব হওয়ায় তারা আবার অপকর্মে লিপ্ত হয়, আবার স্বর্ণের গাভীর পূজা করা শুরু করে। সেই একই ধারাবাহিকতা ইতিহাস ঘেটে বারবার দেখা যাবে। জাতি হিসেবে এরা অত্যন্ত বুদ্ধিমান অথচ ইতিহাসে এদের টেকশই উন্থানের কোন নজির নাই। ইতিহাসের একই পুনরাবৃত্তি – উন্থান, দুর্ভিক্ষ, গণহত্যা আবার…।

ইতিহাসের সংক্ষিপ্ত প্যাচাল শেষ।

“রোমকরা পরাজিত হয়েছে, নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর অতিসত্বর বিজয়ী হবে, কয়েক বছরের মধ্যে। অগ্র-পশ্চাতের কাজ আল্লাহর হাতেই। সেদিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে” – (সূরা রুমঃ ২-৪)।

যে প্রেক্ষিতে আয়াতটি নাযিল হয় সেটি ঘটে গেছে। কিন্তু ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়ত এখনও বাকি। এরই ধারাবাহিক কিছু ব্যাখ্যা খোজার চেষ্টা করব নিচে।

একটা বিষয় বর্তমান প্রেক্ষাপটকে দেখে স্পষ্ট যে, গ্রেট ওয়্যারের একদিকে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ইহুদি, খ্রিষ্টান (ক্যাথলিক), জায়ানিস্ট জোট থাকবে এবং অপর দিকে থাকবে রাশিয়ার নেতৃত্বাধীন জোট। বিষয়গুলো সম্পর্কে রাশিয়ার সুক্ষ পর্যবেক্ষণ আছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।

রাসূলুল্লাহ (স.) এর সময় মুসলমানদের সাথে আবিসিনিয়ার রোমক অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের মিত্রতা ছিল। এখানে দুটি যুগের কথা ব্যাখ্যায় পাওয়া যায়, এক যুগ হল নবীজি (স.) যুগ এবং আরেকটি দ্বারা ভবিষ্যৎকে বুঝানো হয়েছে যেখানে আবারও তারা মুসলমানদের মিত্ররূপে আবির্ভূত হবে। সূরা রুম –এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী তারা যখন যুদ্ধে বিজয়ী হবে আমরা মুসলমানরা সেদিন আনন্দ করব, উল্লাস করব বিজয়ের খুশিতে। বর্তমানে যা হচ্ছে সেটিও তারই কোন ধারাবাহিকতা কিনা তা আল্লাহ ভালো জানেন। এখনও ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রতিটি বিজয়ে বেশিরভাগ মুসলিমরা উল্লাস প্রকাশ করে। এই মিত্রদের ব্যাপারে কোরআন আরও বলছে –

“আপনি সবার চাইতে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বে অধিক নিকটবর্তী তাদেরকে পাবেন, যারা নিজেদেরকে খ্রিষ্টান বলে। এর কারণ এই যে, তাদের মধ্যে আলেম রয়েছে, দরবেশ রয়েছে এবং তারা অহঙ্কার করে না” – (সূরা মায়েদাঃ ৮২)।

এরা অর্থোডক্স খ্রিষ্টান। আর বর্তমান অর্থোডক্স খ্রিশ্চিয়ানিটির হেডকোয়ার্টার মস্কোতে। এই মস্কো আর ৯০ –এর আগের মস্কো আলাদা। তবে মস্কো-মুসলমান এ্যালায়ান্স বা রাশিয়া প্রসঙ্গটির ব্যাপারে অনেক পক্ষ বিপক্ষ বা অনেকের মতে অতিরঞ্জন এমন কথা বললেও যত দিন গড়াচ্ছে ততই যেন বিষয়টি স্বচ্ছ পানির মতো পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে।

ইতিহাস ও ধর্ম নিয়ে দুইটা পয়েন্ট তুলে ধরার কারন হয়ত পুরো লেখা পড়লে বুঝা যাবে।

গত ভিক্টরি ডে উপলক্ষ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যে বক্তব্য দিয়েছিলেন তার একটা অংশ হুবুহু শেয়ার করছি –

“Our only friendships that we can have between the east and west around this world, what we want for the future is a future of peace, a future of stability, not a future of blood. But the Elite in the West, they keep talking of their exceptionalism, of how they are different, and they are the ones creating a sense of disruption between our people. They are the ones destroying family values, traditional values that make everyone on this planet human.”

এই Elite in the West বা পশ্চিমা এলিটরা আসলে কারা? তারাই কি আসল বিভ্রান্তকারী? তারা কি থার্ড টেম্পল মুভমেন্টের সাথে জড়িত? এরাই কি সেকরেট সোসাইটিগুলোর সদস্য?

বক্তব্যে নিচের ২টা পয়েন্ট স্পষ্ট

  • Elite in the West বা পশ্চিমা এলিটদের দিকে সুনির্দিষ্টভাবে দোষারোপ করা হয়েছে।
  • চিরাচরিত পারিবারিক মূল্যবোধ ধ্বংস করা হচ্ছে যা তিনি প্রায় বলে থাকেন যার মাধ্যমে এলজিবিটিকে দায়ি করেন। এলজিবিটির বিরুদ্ধে তার অবস্থান অনেক আগেই স্পষ্ট করেছেন।

রাশিয়া শুধু রণকৌশল নয় বরং এসব তাত্ত্বিক বিষয় বিশ্লেষণ করে মাঠে নেমেছে এবং তারা খুব ভালো করে জানে যে এই সংঘাত শেষ পর্যন্ত ধর্মযুদ্ধে রূপ নিতে পারে। এ ধরনের তত্ত্বগত দিকের অনেক প্রমাণ দেয়া যায়, যেমন ভ্লাদিমির পুতিনের ব্রেইন হিসেবে পরিচিত দার্শনিক আকেক্সান্ডার দুগিন যিনি অনেক আগে থেকেই এটিকে আদর্শিক লড়াই হিসেবে বলে আসছেন। এই আদর্শটা আসলে ধর্মভিত্তিক। দুগিন তার বিভিন্ন বইয়ে অনেক আগেই এসব যুদ্ধের রূপরেখা নিয়ে লিখেছেন। পুতিনের আরো একজন দর্শন হলেন রাশিয়ান অর্থোডক্স চার্চের প্রধান প্যাট্রিয়ার্ক কিরিল। তিনিও এই যুদ্ধকে ধর্মীয় ও পবিত্র যুদ্ধ হিসেবে দেখেন এবং এর মধ্যদিয়ে সমস্ত অর্থোডক্সের আধ্যাত্মিক শক্তিকে শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

রুমের সাথে মুসলমানদের সন্ধি হবে বলে যে হাদিসটি আছে সেটিও তারা ভালো করে জানেন। একটু খোজ নিলে দেখবেন যে এস্কেটোলজি চর্চায় থার্ড রোম বলতে রাশিয়াকে ধরে নেয়া হয়। এ সম্পর্কে আমার আগের আছে পড়তে পারেন।

এবার মাসিহা প্রসঙ্গ। মেশিয়ানিক যুগ কী তা উইকিপিডিয়া ঘেটে জানার চেষ্টা করলাম –

মেসিয়নিক যুগ হল এমন একটা সময় যেখানে মাসিহা পৃথিবী রাজত্ব করবে এবং যুদ্ধ সংঘাত সব বন্ধ হয়ে বিশ্বে সার্বজনীন শান্তি ও ভ্রাতৃত্ব ফিরে আসবে। এখানে ইহুদিদের বিশ্বাসের চিত্র ভিন্ন হলেও খ্রিস্টান এবং মুসলমান উভয়ে বিশ্বাস করে যে এটি ঈসা (আ.) এর যুগ যেটিকে অনেকে কিংডম অফ গড বলেছেন।

Apocalypse (Full Episode) | The Story of God with Morgan Freeman

অনেকে থার্ড টেম্পলকে এর সূচনা বলে মনে করে থাকেন। ইহুদিরা মনে করে তাদের মাসিহা আলাদা এবং সে এসে তাদের হাতে বিশ্ব ক্ষমতা তুলে দিবে যার হেড কোয়ার্টার হবে থার্ড টেম্পল।

কমেন্ট সেকশনে ভিডিও লিংক [১]

গাভী বিত্তান্ত

না। এটি আহমদ ছফা রচিত “গাভী বিত্তান্ত” উপন্যাস সম্পর্কে কিছু নয়। তবে গাভীর কথা শুনে আধুনিক শিক্ষিত মানুষরা ভ্রু কুচকাতে পারে। এ আবার কি বলে! কিন্তু ইহুদিরা মূসা আ. এর সময়কাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত গাভীর খোজে বারবার প্রহর গুণেছে। এখানে আসল গাভীর যেমন মোজেজা আছে যেটা মূসা আ. এর মাধ্যমে বনি ইসরাইলরা প্রমাণ পেয়েছিল। তেমনি আছে স্বর্ণের নকল গাভীকে পূজা করা নিয়ে ধ্বংসের ইতিহাস। হযরত মুসা (আ.) এর সময়ের সেই গাভীর মোজেজা সম্পর্কে সূরা বাকারায় উল্লেখ আছে। আর সূরা বাকারার শাব্দিক অর্থই হলো গাভী।

থার্ড টেম্পল নির্মান করতে হলে জাতিগতভাবে ইহুদিদেরকে পবিত্র হতে হবে। তাদের ধর্মগ্রন্থ্য তাওরাত অনুযায়ী এই পবিত্রতা অর্জনের জন্য একটি নিখুঁত লাল গাভী সাক্রিফাইস করা প্রয়োজন। এ কারনে বহু বছর ধরে লাল গাভী পেলেই সেটিকে নিয়ে পরীক্ষা নিরিক্ষা করে তারা। এর আগে ১৯৯৭ সালেও লাল গাভী পাওয়ার খবর বের হয়েছিল কিন্তু পরে সেটি ’নিখুঁত লাল গাভী’ পরীক্ষায় পাস করতে পারেনি। [২]

তারপর সম্ভবত ২০০২, ২০১৪, ২০১৮ সালেও এরকম খবর বের হয়। কিন্তু সেগুলোও পরীক্ষায় ফেল করে। মানে তাদের কাঙ্খিত নিখুঁত লাল গাভী সেগুলো হতে পারেনি।

উইকিপিডিয়া তথ্য অনুসারে, মূসা (আ.) থেকে দ্বিতীয় টেম্পল ধ্বংসের সময়কাল পর্যন্ত মোট নয়টি গাভীকে সাক্রিফাইস করা হয়েছে। এরপর ২০০০ বছর ধরে ১০ তম গাভীর জন্য তারা অপেক্ষা করছে।

সম্প্রতি জোড়ালোভাবে প্রচার করা হয় যে, তাদের সেই কাঙ্খিত নিখুঁত লাল গাভী পেয়ে গেছে। এটা কতটুকু সত্য নাকি হাইব্রিড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে লাল গাভীর প্রজনন করেছে যাতে করে তাওরাতের কথা উল্লেখ করে তাদের ফে ক মাসিহাকে পাওয়ার জন্য কাজ শুরু করে দিতে পারে সেটা সময় বলে দিবে। [৩]

থার্ড টেম্পল তৈরির অগ্রগতি কতদূর কি?

এটা বুঝা গেল যে গাভীর সাথে থার্ড টেম্পল তৈরির সম্পর্ক আছে। লাল গাভী পেলে তারা থার্ড টেম্পল তৈরির জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে। এখন এসব কিছু প্রপাগাণ্ডা কিনা তা কিভাবে বুঝা যাবে? এ সম্পর্কে দৃশ্যমান তাজা খবরগুলো গুগল এ্যালার্টে গিয়ে “টেম্পল মাউন্ট” অ্যালার্ট সেট করে রাখলেই নিয়মিত আপডেট পাওয়া যাবে। কিন্তু এর বাহিরে অসংখ্য বিষয় জড়িত যা দেখার জন্য থার্ড আই প্রয়োজন। ধর্মগ্রন্থ্যে উল্লেখিত ভবিষ্যৎবাণি নিয়ে স্ট্যাডি করা প্রয়োজন।

আমার মতে মোটাদাগে পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্র নিচের তিনটি –

  • ভূরাজনীতি
  • প্রকৃতি এবং
  • প্রযুক্তি

এই তিনটার কথা অনেকদিন হলো বলে আসছি। কারণ এই পুরো ব্যাপারটার সাথে ডিপপুলেশনের সম্পর্ক আছে যা প্রকৃতিক বিপর্যয় এবং ভূরাজনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘটবে। আর প্রযুক্তির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা হবে।

থার্ড টেম্পল প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইহুদিরা ১৯৮৭ সালে দ্যা টেম্পল ইন্সস্টিটিউট গঠন করে। তাদের কাজ হলো টেম্পল মাউন্ট তৈরির সব কাজকে সমন্ময় ও তরান্বিত করা। তাদের অফিসিয়াল ডকুমেন্টারি অনুযায়ী এরমধ্যে টেম্পলের কাঠামো তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এমনকি টেম্পলের ভিতরে ব্যবহৃত বিশেষ আসবাবপত্র তৈরির কাজও শেষ। এখন অপেক্ষা কেবল লাল গাভীর।

লাল গাভী প্রাপ্তির খবরসহ আল-আকসা মসজিদ এরিয়াকে ঘিরে আরো কিছু সুপারন্যাচারাল ঘটনা ঘটেছে বলে খবর প্রকাশিত হয়, পাশাপাশি অনেক ইভেন্ট আছে যেগুলোর সাথে থার্ড টেম্পলের লিডার আগমনের সংযোগ আছে বলে মনে করা হয়।

কমনওয়েলথ গেমস ২০২২ এর উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানটি দেখুন।

এখানে বাল, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দেবতার আগমনকে আলিঙ্গন করা হয়েছে। ইংরেজীতে বাল (Baal) একটি শিংওয়ালা ডেমোনিক ক্যারেক্টার, দ্যা বি স্ট। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী Baal is a Canaanite-Phoenician god of fertility and weather, specifically rainstorms. The name was also used as a title, however, meaning Lord and was applied to a number of different deities throughout the ancient Near East. It’s a demon described as a hoarsely-voiced king.

কালের পরিক্রমায় আমরা ঠিক কোথায় অবস্থান করছি তা বোঝার জন্য কমনওয়েলথ গেমস ২০২২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যে বার্তা দেয়া হয় তা যথেষ্ঠ।

ভিডিওটি একবারে না বুঝলে বারবার দেখুন। সাবটাইটেলে উল্লেখ করা বাইবেলের লাইনগুলোর সাথে মিলিয়ে নিন। কারন এই শক্তি আগমনকালে কি হবে তা বাইবেলে যেভাবে উল্লেখ আছে তা টু দ্যা পয়েন্টে অনুসরন করা হয়েছে এই উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে। যেমন মেয়েরা তাকে আলিঙ্গন করবে এবং বেশিরভাগ তার অনুসারী হবে। একের পর এক দেশ তার সাথে মানে বিস্ট সিস্টেমে যোগ দিবে বা দিতে বাধ্য হবে ইত্যাদি। ভিডিওতে বিস্তারিত দেয়া আছে। কমেন্টে ভিডিও লিংক [৪]

বোধসম্পন্ন যেকারো দৃষ্টি খুলে দেয়ার জন্য এবং সময়ের পরিক্রমায় ঠিক কোথায় আমাদের অবস্থান তা বুঝার জন্য এই ইভেন্ট সাহায্য করবে।

এখন প্রশ্ন হলো এতো বড় একটা বিশ্ব মঞ্চে এই আয়োজনের মাধ্যমে কি বুঝানো হলো? এই প্রশ্নের উত্তর ভিডিওটির কমেন্ট সেকশনে গেলে আশা করি পেয়ে যাবেন।

আর থার্ড টেম্পলের সবচেয়ে বড় বাধা হলো মুসলিম বিশ্ব। উইকিপিডিয়াতেও এই তথ্যটি দেয়া আছে। এই মূহুর্তে ফিলিস্তিনিদের উপর নি র্যাতন ইসরাই য়েলিদের কাছে ঘরোয়া ম্যাচের মতো। এখন তাদের পুরো মুসলিম বিশ্বকে আরো শক্ত করে কব্জায় রাখতে হবে থার্ড টেম্পলের ভিত্তি স্থাপন করতে। তো সেই চেষ্টার অগ্রগতি ঠিক কতটুকু তা বুঝার জন্য এই মূহুর্তে ২টা বিষয় পর্যবেক্ষণে রাখা যায় তাহলো – মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে চীনের চলমান শান্তি তৎপরতা এবং সৌদি আরবের সাথে ইসরাইলের পিস ডিল। এই শান্তি শান্তি প্রক্রিয়ার উদ্দেশ্য কি আসলেই শান্তি নাকি অন্যকিছু? চীনের শান্তি প্রক্রিয়ার পিছনে আসলে কারা? সৌদি আরব এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন “Peace Day Effort” নামে এই উদ্যোগটি গ্রহণ করে। জর্ডান, মিশর এবং আরব লীগও এই শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ। আসল উদ্দেশ্য থার্ড টেম্পল কিনা সেটা দেখার জন্য সময়ের অপেক্ষায় থাকতে হবে। এই সময়ে এ ধরনের পিস ডিল অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটা নিয়ে আমার আগের লেখা পড়তে পারেন। এর ফলে খুব শীঘ্রই ফিলিস্তিন জনগনতো বটেই বাকি সবারও চরম দুর্দশা প্রত্যক্ষ করা শুরু করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

এ সময়ে রাশিয়ার অবস্থান সার্বিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ থাকার সম্ভাবনা থাকলেও চীনের ভূমিকা মোটেও তা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নাই। অন্যদিকে এই পিস ডিলের সময় যদি জেরুজালেম চূড়ান্তভাবে ফ্লারিশ করা শুরু করে তবে সৌদি আরবও তার কর্মফল ভোগ করা শুরু করবে। এতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। রাসুল (সা.) বলেন “Jerusalem will flourish when Yathrib (Modina) is in ruin, Yathrib will be in ruins when the Great War occurs. The Great War will occur when Constantinople is conquered, and Constantinople will be conquered when the Dajjal appears” – Sunan Abu Daawood 4294. আল্লাহ ভালো জানেন এটা এই সময় কিনা। কিন্তু চীন যতই শান্তি শান্তি করুক আল আকসা মসজিদে হাত দিতে গেলে ইরানকে ফেস করতে হবে। এখানেই ট্রিগার পয়েন্ট। আসল বারুদ জ্বলার ট্রিগার পয়েন্ট। তবে আসল প্রতিরোধ ইরান থেকে হবে নাকি অন্য কোন দেশ থেকে সেটা সময় বলে দিবে। এটা হতে পারে আফগানিস্তান অথবা অন্য কোন পূবের দেশ অথবা সমন্বিত প্রতিরোধ। সত্য-মিথ্যা, অগ্র-পশ্চাত আল্লাহু আলম।

নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের সাথে কি সম্পর্ক?

এখানেও স্রোতের বিপরীতে কিছু বিশ্লেষক মনে করেন নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার মানেই চীন নতুন সুপার পাওয়ার না। ডিডলারাইজেশন মানে ইউয়ান বা রুবলের টেকশই উন্থান না। এ সম্পর্কে TEDx ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন। ভিডিওটির টাইটেলই হচ্ছে “The Next Global Superpower Isn’t Who You Think” [৫]

TED এর লেকচারে ৩টা অর্ডারের কথা উল্লেখ আছে-

  • ওয়ার্ল্ড সিকিউরিটি অর্ডার যেটা এই মূহুতে এককভাবে আমেরিকা ডমিনেট করে।
  • ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক অর্ডার যেটা মোটা দাগে ২টা দেশ অথবা একাধিক দেশ ডমিনেট করে অর্থাৎ মাল্টিপোলার।
  • এরপর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ডিজিটাল অর্ডার যেটার নিয়ন্ত্রণ কিছু প্রতিষ্ঠানের হাতে।

নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের মূল চালিকা যদি হয় প্রযুক্তির হাত ধরে তাহলে হিসাব খুব সহজ হয়ে যায়। সহজেই বুঝা যায় এটার নিয়ন্ত্রন কারা নেয়ার চেষ্টা করছে। এটা কি ভ্লাদিমির পুতিনের ভাষায় এলিট ইন দ্যা ওয়েস্ট না? জেরুজালেমে এর হেডকোয়ার্টার করার চেষ্টা কি হচ্ছে না?

যদিও অসংখ্য ইউটিউবার এবং বিশ্বের বাঘা বাঘা বিশ্লেষক এরই মধ্যে চায়নাকে নতুন সুপার পাওয়ারের আসনে বসিয়ে ফেলেছে। কিন্তু ছোটবেলা থেকে আমার মতের সাথে সংখ্যাগরিষ্টদের মিলে না। এখনও তাই। যেটা করার চেষ্টা চলছে সেটা হলো-

নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার = ওয়ান ওয়ার্ল্ড রিলিজিয়ন + ওয়ান ওয়ার্ল্ড ক্যারেন্সি (ডিজিটাল ক্যারেন্সি) + ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নান্স

জিউসরা বিশ্বাস করে থার্ড টেম্পল হওয়া মানে তারা বহু প্রতিক্ষিত ফেক মেসিয়ানিক যুগে প্রবেশ করবে। থার্ড টেম্পলের সাথে ফেক মাসীহ এর আগমন জড়িত, এরসাথে জড়িত ইমাম মাহাদীর আগমন তারপর আসল মাসীহ। এর অর্থ কি দ্বারাই, থার্ড টেম্পল শুরুর চেষ্টা মানেই কি মেসিয়ানিক যুগের সূচনা! ইসলাম ও খ্রিষ্টান উভয় ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী এইসমস্ত ঘটনাগুলো সূতোয় গাথার মতো, পরপর ঘটতে থাকবে।

থার্ড টেম্পল, পিস ডিল বা মধ্যপ্রাচ্যের শান্তির নামে যে ধরনের অনিষ্ঠই হোক না কেন এগুলোর জন্য আমাদের নিজেদের কর্মফল দায়ী। আমাদের ভারসাম্যপূর্ণ মধ্যমপন্থা উম্মাহ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমাদের অন্তর অহঙ্কার, অন্তদ্বন্দ্ব, উগ্রতা, হিংসায় পরিপূর্ণ। এখন সময় ভালো না। স্রোত যেদিকে যাবে ভেসে যেতে হবে। ভাসতে ভাসতে ঘন কালো অন্ধকার পার করে আবারো নতুন আলো আসবে। ইন শা আল্লাহ।

আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান দিয়ে ভারি বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করেছি মাত্র। যেকোন তথ্যের বিপরীত কোন তথ্য থাকলে অবশ্যই শেয়ার করবেন, যেীক্তিক হলে সংশোধন করে নিব।

শেষ কথা, থার্ড টেম্পল অথবা ইন্ড টাইম বা শেষ জামানা শব্দগুলো শুনলে আমাদের অনেকের অবয়বে যে জিনিসটি ফুটে ওঠে তা এরকম – বাদ দেন, ওসব বারাবারি, পরে দেখা যাবে, এখনও অনেক সময় আছে, যা হবার তা হবে, সময় হলে দেখা যাবে ইত্যাদি। অনেক আলেম ব্যস্ত হয়ে পরেন জাল হাদিস প্রমাণের জন্য, আকিদা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যেকোন ভাবে এড়িয়ে যেতে চান। এমনকি গবেষণামূলক তথ্য প্রমাণ তুলে ধরলেও তা গায়েব, ভবিষ্যৎবাণি, দুর্বল হাদিস, অতিরঞ্জন ইত্যাদি বলা হয়। আবার আধুনিক শিক্ষিত, স্মার্ট মানুষরা তো লাল গাভী শুনে খ্যাত, সেকেলে চিন্তার উপাধী দিতে মূহুর্তও দেরি করে না।

বিভ্রান্তি বা অতিরঞ্জন না, সত্য জানা জরুরী। আর এ সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য বের করা। আমাদের অন্তদৃষ্টি বা থার্ড আই দিয়ে দেখার সক্ষমতা তৈরি করতে না পারলে এই ডিপ ফেক এর যুগে সত্য খুজে বের করা কঠিন। খুব কঠিন। তাছাড়া বিষয়টি সত্য নাকি ধোকা, সত্য হলে কতটুকু সত্য সেটি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের বিষয়। কারন এটি পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধোকাবাজের কাজের সাথে সম্পর্কিত। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝা, সঠিক পথে চলা এবং এই কঠিন সময় মোকাবিলা করার তৌফিক দান করুন।


———————
২০/৯/২০২৩

What do you think?

17 Points
Upvote Downvote

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

One Comment

BRICS-5-members

ব্রিকস এর দশ রাজা এবং বিশ্ব শান্তির চুক্তি

the great reset- you will own nothing and you will be happy

দ্যা গ্রেট রিসেট: আমাদের কিছুই থাকবে না, তারপরও সুখী হব!