কল্পনার থেকেও অনেক দ্রুত বদলে যাচ্ছে – প্রযুক্তি, প্রকৃতি, ভূরাজনীতি। নিচের ছবিটি কিছুদিন আগে প্রকাশিত। এ প্রসঙ্গে যাওয়ার আগে বলে নেয় এআই এর গডফাদার নামে পরিচিত ড. জিওফ্রে হিনটন নিজের আকিস্কারের জন্য এখন অনুশোচনায় কাতরাচ্ছেন। আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যে ধ্বংসাত্নক ব্যবহার হবে তা জানলে তিনি এর আবিস্কার করতেন না এমনটা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন এই ভদ্রলোক। তাতে কি, তিনি না করলে আরেকজন সেটা করত।
প্রযুক্তিতে পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার হলো এআই। এখন দেখার বিষয় হলো এটা কি মানব সভ্যতাকে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিবে নাকি এ (A) দিয়ে যে ওয়েভ দেখানো হয়েছে সেটা আসলে আর্টিফিসিয়াল ভেলকি যা বেলা শেষে ’ডিপ ফেক’ হিসেবে প্রমানিত হবে। আর আই (I) দিয়ে ’শিংওয়ালা‘ ইন্টেলিজেন্ট এক শ্রেণী এবং তাদের কার্যক্রমের স্কেল আপকে বুঝানো হয়েছে।
এআই নিয়ে দুনিয়ায় এতো আতঙ্ক কেন? আবিস্কারক এতো অনুশোচনা করছেন কেন? কারন এক চ্যাটজিপিটির ঝড়ে সব বেসামাল! সুযোগ বুঝে এরইমধ্যে মাইক্রোসফট ১ হাজার কোটি ডলার ইনভেস্টও করে ফেলছে। এমন আরো এআই ঝড় অপেক্ষমান আছে। এরকিছু ৫জি প্রযুক্তি আসলে ডানা মেলবে। কিন্তু সমস্যা কোথায়? অনেকেই চাকরী হারাচ্ছেন। হারাতেই পারে। অটোরিকসা যখন রাস্তায় নামল অনেক বাংলা রিকসাওয়ালার মাথায় হাত ছিল। তাতে কি! জি না, এআই কোন অটো রিকসা না। এটা এমন এক প্রযুক্তি যা মানব মস্তিস্কের চেয়েও বেশি তথ্য ধারনের ক্ষমতা অর্জন করতে সক্ষম। সত্য মিথ্যের তফাৎ খুজে বের করা কঠিন করে দিতে সক্ষম এই সিস্টেম। আর চাকরীর বাজার তো দখল করবেই যা অর্থনৈতিক ভারসাম্য নষ্ট করবে।
কিন্তু এর থেকেও বড় কাজ যেটা করবে সেটা হলো এই সিস্টেম ইলন মাস্কের নিউরালিংকের মতো প্রযুক্তির চাহিদা তৈরি করবে। এটা একান্ত আমার বিশ্লেষণ। এবং এখানেই ব্যবসা এবং মানব মস্তিস্ক নিয়ন্ত্রণের একটা কমপ্লিট প্রক্রিয়া। নিউরালিংক সম্পর্কে আগেও লিখেছি। এটা মানুষের মস্তিস্কে বসানো হবে যা নাকি মস্তিস্কের সক্ষমতা বহুগুণ বৃদ্ধি করবে। মানে চাকরীর বাজারসহ পথে ঘাটে যখন এআই এর সাথে মানব মস্তিস্ককে টেক্কা দিতে হবে এবং ক্লান্ত হয়ে পরবে তখনই নিউরালিংকের বাজার তৈরি হবে। আর এতদিন মোবাইল, ফেসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্য তাদের হাতে যেত, এরপর থেকে সরাসরি আমাদের মস্তিস্ক থেকে ডাটা ট্রান্সফার হবে তাদের ভান্ডারে। এটাকে অকল্পনীয় মনে করলেও বাস্তবতা হলো এর পরীক্ষামূলক কার্যক্রম এরই মধ্যে শেষ।
ইকোনমিস্ট ম্যাগাজিনের কভারে ফিরে আসি। আসলে আমাদের মতো আমজনতার জন্য ম্যাগাজিনটি তাদের কভার ইমেজ বানায় না। এগুলোর মধ্যে অন্তর্নিহিত সংকেত লুকানো থাকে। এখানে লেখা হয় একটা বিষয় নিয়ে আর কভার ইমেজ দিয়ে বুঝানো হয় আরেকটা। দূর ভবিষ্যতের কিছু ইঙ্গিত করে যা ডিকোড করা খুব সহজ না। এক কথায় বলতে গেলে আর্টিকেলে তারা বুঝিয়েছে, সেটা হচ্ছে এআই এর ভালো এবং মন্দ দিক উভয়ই রয়েছে। তো সেটা কোন জিনিসটার নাই! কিন্তু এতটুকুই শেষ! ইকোনমিস্টের কভার ইমেজ মানে বিশেষ কিছু।
প্রযুক্তি, প্রকৃতি ও ভূরাজনীতি – এই তিন ক্ষেত্রে দুনিয়া জুড়ে যে ঝড় তুফান চলছে, তারমধ্যে প্রযুক্তিতে পরিবর্তনের অন্যতম হাতিয়ার হলো এআই। এখন দেখার বিষয় হলো এটা কি মানব সভ্যতাকে কয়েক ধাপ এগিয়ে নিবে নাকি এ (A) দিয়ে যে ওয়েভ দেখানো হয়েছে সেটা আসলে আর্টিফিসিয়াল ভেলকি যা বেলা শেষে ’ডিপ ফেক’ হিসেবে প্রমানিত হবে। আর আই (I) দিয়ে ’শিংওয়ালা‘ ইন্টেলিজেন্ট এক শ্রেণী এবং তাদের কার্যক্রমের স্কেল আপকে বুঝানো হয়েছে।
যেটাই হোক, শিংওয়ালারা কতো কিছুরই না পরিকল্পনা করেছে। কিন্তু সমস্ত পরিকল্পনা ভেস্তে যাবে কারন উত্তম এবং চূড়ান্ত পরিকল্পনাকারী একজনই। “নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম পরিকল্পনাকারী।” [সূরা আনফাল : ৩০]
———————
১/৩/২০২৩
GIPHY App Key not set. Please check settings