in

কাগুজে মুদ্রা, ডিজিটাল ব্যাংকিং এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি

paper currency digital banking and cryptocurrency

আমরা যে পেপার মানি বা টুকরা কাগজ (চেক বই) নিয়ে বাহাদুরি করি বহু আগেই তার নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে বড়দের হাতে এবং তখন থেকেই তারা ইচ্ছেমত এর উপর ছুড়ি চালায়। সম্প্রতি বিনিময় নামে এই বঙ্গে একটা এ্যাপস চালু করেছে সরকার তা নিয়েও সমস্যা। আরে সমস্যা তো সেই বিনিময় প্রথা (বার্টার সিস্টেম) যখন ছিল তখন থেকেই। বিনিময়ের সমস্যাগুলো দেখুন-

মানুষ প্রথম দিকে পণ্য বা সেবা সরাসরি একজন আরেকজনের সাথে বিনিময় করত। মানে একজনের কাছে চাল আছে কিন্তু তার প্রয়োজন ডাল। এখন যার কাছে ডাল আছে তাকে কিছু চাল দিয়ে চালডাল বিনিময়। এই বিনিময় প্রথায় সমস্যা দেখা দেয়। বড় সমস্যা হলো ডালওয়ালার যদি চাল দরকার না হয় তাহলে আর বিনিময় হবে না।

শুরু হলো সোনা, রুপা, তামা ইত্যাদি ধাতব মুদ্রার প্রচলন যার মাধ্যমে উপরের সমস্যার সমাধান হলো। কিন্তু শুরু হলো নতুন সমস্যা। সোনা, রুপা অনেক মূল্যবান হওয়ায় সেটা বহন করা ঝুকিপূর্ণ। সমাধান কি? যে মূল্যবান ধাতুর সংরক্ষণ করতে পারবে তার কাছে সোনা রুপা জমা রেখে এক টুকরা কাগজ (এগ্রিমেন্ট/চেক/রিসিট) নেয়া শুরু হলো। সাথে শুরু হলো নতুন সমস্যা। ঐ ব্যক্তি স্বর্ণ জমা না রেখে বরং সেটা খাটানো শুরু করল। ব্যাংকিং ব্যবস্থা শুরু হলো। ধাতব মুদ্রা থেকে শুরু হলো কাগুজে মুদ্রা। সুবিধা অনেক। কিন্তু সমস্যা কি শেষ হলো? মূল্যবান উপাদান সোনা, রুপাকে আমরা ভুলে গিয়ে এক টুকরা কাগজের পিছে ছুটা শুরু করলাম। কিন্তু বড়রা ঠিকই বুঝল এবং সোনা রুপা মজুদ করা শুরু করল। ফলসরূপ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। এখন যাদের ১০৬ টাকা প্লাস ১৫% ভ্যাট মানে প্রতি ডলারে ১২১ টাকা দিতে কোষ্ঠকাঠিন্যের অবস্থা, ঘুম থেকে উঠে যদি দেখেন ডলারের দাম ১৩০ টাকা হয়ে গেছে, কিছু করার আছে? নাই। নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে। তারমানে বড় সমস্যা রয়ে গেছে।

এবার পেপার মানি থেকে আরো একধাপ সামনে চিন্তা করা যাক। ডিজিট মানি! মানে আমরা শুধু মোবাইলে বিকাশ, নগদে ব্যালেন্সের ডিজিট জানতে পারি- ইয়র লেটেস্ট ব্যালেন্স ইজ…। এর বেশি আর কিছু জানিনা। কাগুজে টাকা তাও তো হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করা যেত এবার সেটারও দরকার নাই। এখন যান্ত্রিক ত্রুটি বা ইচ্ছেকৃত ক্রটির কারণে ডিজিট যদি হাওয়া হয়ে যায় তখন কি করবেন? প্রসঙ্গত আজকেই প্রায় ৫০ কোটি হোয়াটসঅ্যাপ ইউজারের ডাটা গায়েব হয়ে গেছে। তাজা খবর। তারমানে সমস্যা রয়ে গেছে। ওকে, বিকাশ, নগদের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলে বাংলাদেশ ব্যাংকে যাবেন, ক্ষমতা থাকলে বিকাশ নগদ অফিস ঘেরাও করবেন ইত্যাদি। মানে এখনও একটা ভরসার জায়গা আছে।

এবার আরো একধাপ সামনের রাস্তায় পা বাড়াতে হবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারে বাধ্য হতে হবে। তখন? তখনও বিকাশ নগদের মতো শুধু ব্যালেন্সের ডিজিট দেখা যাবে- ইয়র লেটেস্ট ব্যালেন্স ইজ…। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ কার কাছে? ডিজিট গায়েব হয়ে গেলে বা অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য কার অফিস ঘেরাও করবেন? বিটকয়েন, ইথারিয়াম হানোতানোর কোন ফিসিক্যাল এক্সিসটেন্সি নাই। পুরোটাই রহস্যে ঘেরা। এমনকি এটা সরাসরি ডেভিল’স ক্যারেন্সি সিস্টেম কিনা তার পক্ষে বিপক্ষে অনেক তথ্য গুগল ইউটিউবে ভেসে বেড়াচ্ছে। যাহোক এর নিয়ন্ত্রণ এক অদৃশ্যের হাতে। তারমানে এবারের সমস্যাটা হবে মহা সমস্যা।

তো এত সমস্যা.. বড় বড় শাসক দেশ যারা সোনা মজুদ করে জিম্মি করে তাদের কোন সমস্যা হবে না? হ্যা হবেতো। সোনা নিয়েইতো আসল সমস্যা শুরু হবে। আমরা জানি মালহামা/আর্মাগেডন এর চূড়ান্ত পর্ব হবে খনিজ সম্পদ/স্বর্ণ নিয়ে। সেই চূড়ান্ত পর্বের দিকে কি আমরা রওনা হয়ে গেছি? বিজ্ঞজনেরা বুঝবেন। সমঝদার কে লিয়ে ইশারা হি কাফি।

——————
২৮/১১/২০২২

What do you think?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

Why is the year 2023 so important?

২০২৩ সাল কেন এত গুরুত্বপূর্ণ?