in

LoveLove

আপনি কি নিজের সাথে প্রতারণা করছেন?

are you cheating yourself

সবচেয়ে বড় কথা হল, নিজের সাথে মিথ্যা বলবেন না। যে ব্যক্তি নিজেকে মিথ্যা বলে, নিজের মিথ্যা শোনে, সে এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সে নিজের বা আশেপাশের সত্যের সাথে মিথ্যার পার্থক্য করতে পারে না। ফলে সে নিজের প্রতি সম্মান হারিয়ে ফেলে, অন্যদের প্রতিও হারিয়ে ফেলে। সম্মান না থাকায় সে ভালোবাসতেও ভুলে যায়।” – ফিওদর দস্তয়ভস্কি

কিছু কিছু মানুষ খুব মিথ্যা কথা বলতে পারে। তারা যে কাউকে ধোঁকা দিতে পারে। কিন্তু নিজেকে ধোঁকা দেওয়াকে কখনো শ্রেষ্ঠ দক্ষতা বলা যায় না। এটা আপনাকে বিপথগামী করে দেবে এবং যে জিনিসগুলো আপনার সত্যিকার অর্থেই দরকার সেগুলো থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে দেবে। কিন্তু, আপনি কিভাবে বুঝবেন যে আপনি নিজেকে মিথ্যা বলছেন?

প্রথম নিদর্শন টা হল, আপনি অন্তর্দর্শনকে এড়িয়ে চলেন। বর্তমান বিশ্ব ক্রমাগত ডিসট্র্যাকশনে ভরপুর, আর আছে বাহ্যিক নানা উদ্দীপনা। আপনি আপনার চিন্তাভাবনা নিয়ে একা সময় কাটাতে চান না। নিজের ভেতরের চিন্তাভাবনাকে নিয়ে সময় কাটাতে ভয় পান। কারণ সময় দিলে তো কিছু রুঢ় বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে। এ জন্য আমরা অন্য মানুষের সঙ্গে গল্পগুজব করে, ফোনে ইউটিউব বা সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় ব্যয় করে অথবা হয়তো অন্য ভাবে সময় নষ্ট করি। আপনি নিজেকে সময় দিতে চান না। নিজেকে বোঝার সময় দেন না যে হয়তো বা ভুল কিছু ঘটছে জীবনে। আপনি যে নিজেকে ধোঁকা দিচ্ছেন, নিজের সাথে সময় কাটাতে না চাওয়া, অন্তর্দর্শন না করাই এর সবচেয়ে বড় লক্ষণ।

দ্বিতীয় নিদর্শন হচ্ছে, অন্যের কিছু কিছু বিষয় আপনাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। যখন আপনি দেখেন যে অন্য কেউ নিজের সাথে সৎ ভাবে জীবনযাপন করছে, স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করছে, স্বাধীনভাবে কাজ করছে তখন আপনি কেন যেন আপসেট ফিল করেন। আপনি তার প্রতি কিছুটা হিংসুটে মনোভাবাপন্ন হয়ে ওঠেন। এই আবেগগুলো অনেক সময় আপনাকে সিগনাল দেয় যে আপনি হয়তো নিজেকে মিথ্যা বলছেন। নিজের প্রতি প্রতারণা করছেন।

তৃতীয় নিদর্শন হচ্ছে, আপনি নিজের জীবন নিয়ে স্যাটিসফেকশন পান না। যদিও আপনার কাছে মনে হতে পারে যে, না সবকিছু তো ঠিকঠাকই আছে। আপনি সত্যিকার সুখ অনুভব করতে পারেন না। আপনার কাছে মনে হয়, আপনি তো অনেক কিছু অর্জন করেছেন। আপনি এমন বিষয় অর্জন করছেন বা করতে চান যেগুলো আপনাকে মোটিভেটই করে না। আপনার যদি মনে হয়, আপনি নিজের সাথে মিথ্যা বলছেন, নিজের সাথে প্রতারণা করছেন তাহলে সত্যের মুখোমুখি হন। এটা অবশ্যই ভীতিকর হতে পারে কারো কারো জন্য। কিন্তু এর বিনিময়ে যা পাবেন তা আপনার জন্য অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ ও মূল্যবান মনে হবে। নিজেকে মিথ্যা বলে আসলে তেমন কোনো লাভ নেই। এর দ্বারা কেবল আপনিই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আপনার নিজের ব্যক্তিগত উন্নতি ঘটবে না, আপনি সুখী হতে পারবেন না। তাহলে কেন আমরা প্রকৃত জীবনযাপন করব না বলুন? আমরা আসলে কে, আমরা কি হতে চাই, এটার ভেতরেই তো আছে সত্যিকারের মানসিক পূর্ণতা।

এই জীবনটাকে পূর্ণ করতে হবে রবের ইবাদতে, যেহেতু এটাই জীবনের মূল উদ্দেশ্য। হতে হবে এক খাঁটি মুমিন। সুতরাং আপনি সৎভাবে জীবনযাপন করুন। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন আপনি কি চান। এরপর আপনি সেই লক্ষ্যের উদ্দেশে কাজ করা শুরু করে দিন। আপনি চিন্তা করুন আপনি আসলে কে? আপনি নিজের প্রতি সৎ হন। নিজের প্রতি সৎ হওয়ার প্রক্রিয়াটা কোন সহজ কাজ না। এতে সময় লাগে, কাজ লাগে, কমিটমেন্ট লাগে। অন্য কেউ যেমন আপনার মত হওয়ার চেষ্টা করে সফলতা অর্জন করতে পারবে না তেমনি আপনিও অন্যের মত হওয়ার চেষ্টা করে সফল হতে পারবেন না। নিজের প্রতি মিথ্যা বলা বন্ধ করুন। এই সিদ্ধান্ত আপনাকে অবশ্যই কখনোই রিগ্রেট করতে হবে না।

What do you think?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

দুআ একটি ইবাদত

দুআ একটি ইবাদত, মুমিনের হাতিয়ার

Banned Coca Cola, A Religious Demand

কোকাকোলা বর্জন ঈমানি দাবি