আমরা কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে আছি? তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এমন ভয়াবহ কথাটি কিছু বিশ্বনেতা, সামরিক ব্যক্তিত্ব, ভূরাজনীতিবিদ এবং সমর বিশ্লেষক এরই মধ্যে উল্লেখ করেছেন। তবে ঠিক শুরু হয়ে গেছে কথাটিতে এখনও অনেকের দ্বিমত থাকলেও চলমান পরিস্থিতি যে সেদিকে মোড় নিচ্ছে সে ব্যাপারটি একবাক্যে সবাই স্বীকার করে। এই লেখায় পরিস্থিতি সেদিকে যাচ্ছে নাকি ইতিমধ্যে আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যেই আছি তা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করব।
সংখ্যাতত্ত্ব
সংখ্যাতত্ত্বের (নিউমারোলজি) সাথে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সম্পর্ক নিচের আলোচনায় পাওয়া যাবে। তার আগে জানা যাক সংখ্যাতত্ত্ব বা নিউমারোলজি কি? আসলেই কি এর কোন বাস্তবতা আছে? বিভিন্ন বিশ্লেষণ থেকে দেখা যায়, এই নিউমারোলজির ভিতরেই নাকি মহাবিশ্বের শক্তির রহস্য লুকিয়ে আছে। বলা হয়ে থাকে বিজ্ঞানী নিকোলাস টেসলা ৩৬৯ এর মাঝে বিষ্ময়কর কিছু পেয়েছিলেন যা অসীম শক্তির উৎস ছিল। তার এই গবেষণা শেষ পর্যন্ত আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি। নিকোলাস টেসলা সেই গবেষণার উৎস পেয়েছিলেন মিশরের গিজা পিরামিড থেকে সেটাও নাকি এমনই একটা অসীম শক্তির উৎস ছিল। ইলন মাস্কের টেসলা প্রজেক্টের সাথেও নাকি এই তত্ত্বের যোগসাযোগ আছে। সংখ্যার গুরুত্বের বিষয়টি বিভিন্ন ধর্মেও পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে বিভিন্ন শব্দের সংখ্যার মিরাকল নিয়ে গবেষণা করলে এর গভীরতার অন্ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। যেমন কোরআনে হালাল শব্দ আছে ২৫০ বার ঠিক তার উল্টা হারাম শব্দ আছে ২৫০ বার। আদেশ ১০০০ বার, নিষেধ ১০০০ বার। দুনিয়া ও আখেরাত কথাটি মোট ১১৫ বার করে সমানভাবে এসেছে। আল খাবিস অর্থ অপবিত্র, আত তাইয়েব মানে পবিত্র এবং এই দুটি শব্দ এসেছে মোট সাত বার করে। পুরুষ ২৩ বার এবং নারী শব্দ আছে ২৩ বার। শাস্তি শব্দ আছে ১১৭ বার, আবার ক্ষমা শব্দের সংখ্যা ২৩৪। এরকম অসংখ্য উদাহরন আছে। রাসুল (সা.) এর চুলে ১১টি গিট দিয়ে যাদু করেছিল ইহুদিরা। এখানে ১১টি গিট, ১০ বা ১২ নয়। এর প্রেক্ষিতে যে দুটি সূরা নাজিল হয় সূরা ফালাক ও সূরা নাস সে দুটি সূরার মোট আয়াত সংখ্যাও ছিল ৫+৬= ১১। ৪০ দিন, ৪০ সপ্তাহ, ৪০ বছর ইত্যাদি একজন মানুষের জীবনচক্রের সাথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়।
যুদ্ধ এবং সংখ্যাতত্ত্ব
রোম যখন পুড়ছিল নিরো তখন বাঁশি বাজাচ্ছিলো। নিরো প্রসঙ্গে পরে আসব। তার আগে নিউমারোলজি বা সংখ্যাতত্ত্বের সাথে যুদ্ধের কোন সম্পর্ক আছে কিনা তা জানার চেষ্টা করা যাক। নিউমারোলজির গুরুত্বের বিষয়টি উপরে কিছুটা ধারনা হয়েছে আশা করি। এখন সংখ্যার ভিতরেই যদি পৃথিবীর সমস্ত শক্তি নিহিত থাকে তাহলে এই শক্তিকে অপব্যবহারের সুযোগও নিশ্চয় থাকতে পারে। নিচে দুটি সংখ্যার হিসাব মিলিয়ে দেয়া হলো যেগুলোকে চাইলেও কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। বলা যাবে না কন্সপাইরেসি থিওরি। নিচের যে সংখ্যায় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দুটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে-
১ম বিশ্বযুদ্ধের সংখ্যাতত্ত্ব
২৮+৭+১৯+১৪ = ৬৮
২+৮+৭+১+৯+১+৪ = ৩২
২য় বিশ্বযুদ্ধের সংখ্যাতত্ত্ব
১+৯+১৯+৩৯ = ৬৮
১+৯+১+৯+৩+৯ = ৩২
২৮ জুলাই ১৯১৪ এবং ১ সেপ্টেম্বর ১৯৩৯ ছিল যথাক্রমে ১ম ও ২য় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর দিন। কি মনে হয়? পুরোটাই কাকতালীয় নাকি এই নিউমেরিক ভ্যালুর মধ্যে কিছু একটা আছে বলে মনে হয়।
গেমেট্রিয়া নামে নিউমেরিক ভ্যালু বের করার একটি প্লাটফরম আছে যা একটি কাব্বালিস্টিক মেথড যেটা কিনা হিব্রু স্ক্রিপ্টচারে নিউমেরিকাল ভ্যালু বের করতে সাহায্য করে। কাব্বালাহ হলো তাওরাত, তালমুদ থেকে প্রাপ্ত ইহুদি ধর্মের গুপ্ত (ইসোটেরিক) চর্চা যা এককথায় সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর সৃষ্টির মধ্যে সম্পর্ক বুঝার জন্য কাজ করে। এই বিদ্যার উপর পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত করানো হয়। ইহুদীদের মতে এটা একটা সাইন্স, ব্লাক ম্যাজিকের সাথে এর কোন সম্পর্ক নাই। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, কাব্বালাহ হলো অত্যন্ত শক্তিশালী ব্লাক ম্যাজিক। যাহোক, এসব নিয়ে খুব বেশি গভীরে জানার কোন প্রয়োজন আমাদের নেই। আমরা জানি জাদুবিদ্যা ছিল এবং আছে। এটা সত্য। এটি চর্চার কোন বৈধ্যতা আমাদের নেই। তবে আত্নরক্ষার প্রয়োজন আছে। এটিকে কুসংস্কার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে এমনভাবে আমাদের দৃষ্টি সরানো হয়েছে যে এখন আত্নরক্ষা করতেও ভুলে গেছি।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তবে এ যুদ্ধের ধরনটা আলাদা। আমরা বিশ্বযুদ্ধ বলতে বুঝি প্রথাগত যুদ্ধ যেখানে কয়েকটি দেশের সৈন্য এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তবে পরমাণু অস্ত্রসহ আধুনিক সমরাস্ত্রের কারণে যুদ্ধের গতানুগতিক ধরনটা পাল্টে গেছে। এখন যুদ্ধ হচ্ছে কিছুটা প্রক্সি যুদ্ধের মতো। এখানে একজনের হয়ে অন্যরা অথবা অন্যরা একজনের হয়ে যুদ্ধ করছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ১০ দিনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এটি থামার আপাত কোন সম্ভাবনা নেই। এই প্রশ্নের উত্তর কি তবে এখানে –
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সংখ্যাতত্ত্ব
২৪+২+২০+২২ = ৬৮
২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ছিল এ যুদ্ধের শুরুর দিন। এখানেও নিউমারোলজি। এখানেও ৬৮ ডিজিট মিলানো হয়েছে। তাহলে এটাই কি সেই গ্রেট ওয়্যার? মানে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ! সংখ্যাতত্ত্বের বিষয়টি সত্য ধরে নিলে এটিকেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা বলা যেতে পারে। হতে পারে এটাই সেই যুদ্ধের সূচনা এবং এরপর শুধু ওয়্যার এস্কেলেশন হতে থাকবে। ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, কখনও আফ্রিকা, এশিয়া। গৃহযুদ্ধ থেকে আঞ্চলিক যুদ্ধ এবং এক পর্যায়ে তা মহাযুদ্ধে রূপ নিবে। তবে এর সাথে ৩২ মিলে না। পূর্বের ২টি ঘটনার সাথে নিউমারোলজির যে সম্পর্ক তার সাথে ৩২ সংখ্যার মিল থাকার কথা। এটা ভেবে কি স্বস্তির নিশ্বাস নেয়া যায়? নাকি এটা একটু ভিন্ন ফর্মে সাজানো হয়েছে?
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলায় নিউমারোলজি এবং জাদু বিদ্যার চর্চার কথা শুনে অনেকেই নাক সিঁটকাতে পারে। কিন্তু সংখ্যাতত্ত্বের উপরের উল্লেখিত বিষয়গুলো ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। ঘটে যাওয়া তথ্যগুলোকে একত্রে সাজিয়ে উপস্থাপন করলাম যেগুলোকে কোনভাবেই কাকতালীয় বলার আর সুযোগ নাই। কারো নাক সিঁটকালে সেটা তার নাকে সমস্যা। প্রচলিত শিক্ষা এবং তথাকথিত আধুনিক চিন্তা ধারার সমস্যা।
তবে যে বিষয়টি মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, নিউমারোলজি এবং জাদু বিদ্যা চর্চা করার কোনরকম সুযোগ ইসলামে নাই। কিন্তু কেউ এর চর্চা করলে এবং আঘাত করতে আসলে তা ধরতে পারার সক্ষমতা না থাকা নিজেদের দুর্বলতা। বিশ্বকাপের সময় প্রথম আলোর একটি শিরোনাম ছিল এরকম “এমবাপ্পেকে ভয় পাচ্ছেন আর্জেন্টিনার ডাকিনীরা, করছেন না কালো জাদু”। এটা কি বানোয়াট খবর? এছাড়া মেসির হাতে এক চোখের ট্যাটোর পিছনে কি আছে সেটা নিয়ে বিশ্লেষণ করতে বসলেও কেঁচো খুড়তে সাপ বের হবে। এখানে ডাকিনীরা যা করছে তা সরাসরি শিরক এবং ইসলামে এটি জঘন্যতম পাপ। কিন্তু কেউ এরকম কালো জাদু করছে কিনা বা এ ধরনের আঘাত থেকে হেফাজতের উপায় সম্পর্কে কোন ধারনা না থাকা নিজেদের অজ্ঞতা।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ১৬ মার্চ ২০২৩ এ দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার শেযার করব। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছেন “তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তবে এ যুদ্ধের ধরনটা আলাদা। আমরা বিশ্বযুদ্ধ বলতে বুঝি প্রথাগত যুদ্ধ যেখানে কয়েকটি দেশের সৈন্য এক পক্ষ অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তবে পরমাণু অস্ত্রসহ আধুনিক সমরাস্ত্রের কারণে যুদ্ধের গতানুগতিক ধরনটা পাল্টে গেছে। এখন যুদ্ধ হচ্ছে কিছুটা প্রক্সি যুদ্ধের মতো। এখানে একজনের হয়ে অন্যরা অথবা অন্যরা একজনের হয়ে যুদ্ধ করছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি যা করছে সেটিও আসলে প্রক্সি যুদ্ধ। তিনি পশ্চিমাদের পক্ষে যুদ্ধ করছেন। এটা আসলেই নাৎসিদেরই কাজ। সিরিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোতে যাদেরকে সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে তারা আসলে পশ্চিমাদের বিশেষ বাহিনী।”
তিন সংখ্যা
সম্ববত ২০২১ সাল থেকে হঠাৎ করেই প্রকৃতি, স্বাস্থ্য ও আদর্শ লাইফস্টাইলের নানা খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ তৈরি হয়। ধীরে ধীরে ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, ভূরাজনীতি, ইতিহাস ইত্যাদিও আগ্রহের বিষয় হয়ে পরে। এই আগ্রহের কোন বাউন্ডারি ছিল না। এ সময় কিছু ঘটনার কারণে প্রায় বছর দেড়েক অস্বাভাবিক অবস্থার মধ্যে ছিলাম। একটা পর্যায়ে জানতে পারি যে সেগুলোর সাথে তিন কোন না কোনভাবে জড়িত। শুরুতে কাকতালীয় বলে গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু ৭ অক্টোবর ইসরায়েল আক্রমণের ঘটনার পর থেকে অস্থিরতা বাড়তে শুরু হয়। যুদ্ধ ও তিন সংখ্যার গুরুত্ব আরো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কিন্তু কেন এই তিন সংখ্যা, তার উত্তর এখনও খুজে বেড়ায়।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে তিন সংখ্যার সম্পর্ক
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাথে তিন সংখ্যার কি কোন সম্পর্ক আছে? ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজোগ বলেছিলেন, “ইতিহাসে দুই বার ইহুদি সরকার গঠিত হলেও ৮০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ভেঙে পড়েছে।” তৃতীয় বারের মত একই রকম বিভক্তি ও ভাগ্যনির্ধারণী পরীক্ষায় অবতীর্ণ ইসরায়েল। এই তিন সংখ্যাকে স্পিরিচুয়ালিটি এবং এস্কেটোলজি নিয়ে গবেষণার খাতিরে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয় যা একটার সাথে আরেকটা সম্পর্কযুক্ত এবং অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যক্তিগতভাবে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট নিয়ে যত বিষয়ের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার মধ্যে তিন সংখ্যার আধিক্য দেখে প্রায়ই বিস্মিত হয়েছি।
- থার্ড টেম্পল
- হাদিসে উল্লেখিত দাজ্জাল অথবা বাইবেলে এ্যান্টিক্রাইস্টকে তিনটি ছয় অর্থাৎ ৬৬৬ দিয়ে বুঝানো হয় যার আগমনকে কেন্দ্র করে জায়োনিস্ট ইহুদিদের সমস্ত পরিকল্পনা।
- ব্রিটেনের রাজা চার্লস ৩
- ৩য় পবিত্রতম স্থান আল আকসা
- তিন এইচ (3H) – হামাস (Hamas), হিজবুল্লাহ (Hezbollah) এবং হুথি (Houthi)
- তৃতীয় রোম (Third Rome, Russia; A theological concept)
- তিন সৌদি রাজপুত্র
- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ
- তিন পর্বের মালহামা/আর্মাগেডন
- তিনটি গুরুত্বপূর্ণ শাসন পর্ব (প্যাক্স ব্রিটানিকা, প্যাক্স আমেরিকানা এবং প্যাক্স জুদাইকা)
- ইহুদিদের তৃতীয়বারের মত ক্ষমতা দখলের চেষ্টা। নির্যাতন, আস্ফালন এবং একই সাথে তৃতীয় বারের মত নিজেদের মধ্যে সেই একই রকম বিভক্তি ও ভাগ্যনির্ধারণী পরীক্ষা।
- তিনটি সাপ (অজগর/কোবরা বা বৃহদাকার কোন সাপ)
- ইহুদি জাতির উপর আল্লাহ’র তৃতীয় বারের প্রতিশোধ যা সূরা বণী ইসরায়েল, আয়াত ৮ এ উল্লেখ আছে।
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ কি তিনটি পর্বে হতে পারে?
তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং মালহামা বা আর্মাগেডনের মধ্যে সংজ্ঞাগত পার্থক্য থাকলেও অনেক সময় এই দুটিকে একই অর্থে ধরে নেয়া হয়। মালহামা বা আর্মাগেডন মোটাদাগে তিনটি পর্বে বিভক্ত হতে পারে। মালহামা নিয়ে আলাদা একটি লেখায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। বিষয়টি ব্যক্তিগত গবেষণালব্ধ। কাজেই গবেষণা সঠিক হতে পারে, ভুল হতে পারে অথবা কাছাকাছি হতে পারে।

তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ সম্পর্কে আরো কিছু উল্লেখযোগ্য পয়েন্ট
➤ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ধারাবাহিক খন্ডযুদ্ধ বা প্রক্সিযুদ্ধের সমষ্টি। দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা প্রক্সিযুদ্ধগুলোই এক পর্যায়ে চূড়ান্ত পর্বে রূপ নিবে।
➤ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ স্পষ্টতই ধর্মযুদ্ধ যেখানে শয়তান পূজারীদের দ্বারা মুসলমানসহ অন্য জাতিগোষ্ঠীও যারা তাদের দলে অন্তর্ভুক্ত হতে অস্বীকৃতি জানাবে তারাও নির্যাতিত হবে।
➤ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে ঈসা আ. এর দ্বিতীয় আগমনের পূর্ব পরিণতি বলে ধরে নেয়া হয়। তার আগে গ্রেট ট্রিবুলেশন অর্থাৎ খড়া, দুর্ভিক্ষ, যুদ্ধ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, দাবানল ইত্যাদি দুর্ভোগ প্রত্যক্ষ করবে বিশ্ব।
➤ এ যুদ্ধের অন্যতম পরিণতি হলো ডিপপুলেশন। এ জন্য শুধু গোলাবারুদ নয় বরং জৈব অস্ত্র (বায়োউইপন) বা নানা প্রাণঘ্যাতি ভাইরাস, কৃত্তিম ভূমিকম্প, কৃত্তিমভাবে তৈরি প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে এগিয়ে যাবে। গোলাবারুদ থেকে শুরু করে বাকিগুলোও যুদ্ধাস্ত্র; যেখানে যেটি জুতসই সেখানে সেই অস্ত্র প্রয়োগ হতে পারে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মানেই সব মানুষের পরিকল্পিত এমনটা ভাবার কোন কারন নাই। একই সাথে আল্লাহর পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন হতে থাকবে।
➤ অনেক অলৌকিক অতিপ্রাকৃত ঘটনার সাক্ষী হবে বিশ্ববাসী।
➤ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের চূড়ান্ত ফর্মেশন হবে সত্যের সাথে মিথ্যার, আলোর সাথে অন্ধকার জোটের। এই বিভক্তি এবং লড়াই মানুষ ও জ্বিন জাতি উভয়ের মধ্যে। কিন্তু ভার্চুয়াল ও বাস্তব জগতে সত্য-মিথ্যা এবং আলো-অন্ধকারের পার্থক্য করা খুব কঠিন হয়ে যাবে। অন্ধকার বলবে আমরাইতো আলো। আর প্রকৃত আলো নিভতে নিভতে সংকীর্ণ থেকে আরো সংকীর্ণ হতে থাকবে। অন্ধকার শ্রেণীর আস্ফালন বেড়ে যাবে যেটাকে তারা বিজয় মনে করবে। যেমনটা নিরস্ত্র ফিলিস্তিন মানুষ ও শিশু হত্যা করে বিজয়োল্লাস করে তারা।
সংকটের সমাধান কোথায়?
ফিরে আসি নিরো প্রসঙ্গে। প্রাসঙ্গিক কারনে ইতিহাস ঘেটে দেখব নিরো কেন বাশি বাজাচ্ছিলেন। নিরোর সাথে সংকট সমাধানের কোন সম্পর্ক না থাকলেও এখানেও নিউমারোলজির ব্যাপার আছে যা একাধিক বিশ্লেষণ ও গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত। ইতিহাস থেকে জানা যায় আগুন লাগার স্থানে উনি আসলে একটা স্বর্ণবিল্ডিং করতে চেয়েছিলেন। যেকারনে খুশিতে বাশি বাজাচ্ছিলেন। আগুন লেগেছিল নাকি লাগানো হয়েছিল সেটা নিয়ে আজীবন বিতর্ক চলতে পারে। তবে খ্রিষ্টানদের হত্যার অভিযোগে তাকে ইতিহাসের নিকৃষ্টতম অত্যাচারী শাসক হিসেবে অভিহিত করা হয়। অত্যাচরী এই নিরোর নামের সাথেও আছে নিউমারোলজির ব্যাখ্যা যা ডিকোড করলে পাওয়া যায় ৬৬৬। ন্যাশনাল জিওগ্রাফির ভিডিওটি থেকে এ সম্পর্কে পরিস্কার ধারনা পাওয়া যাবে। বাইবেল অনুযায়ী এই ট্রিপল সিক্স সংখ্যাটি হলো মার্ক অফ দ্যা বিস্ট বা এ্যান্টিক্রাইস্ট। হাদিসে যাকে দাজ্জাল নামে উল্লেখ করা হয়েছে। ইহুদি, খ্রিষ্টান, ইসলাম এমন কি হিন্দু ধর্মেও বলা হয়েছে শেষ জামানায় সবকিছু এভিল পিপলদের হাতে অর্থাৎ ট্রিপল সিক্স এবং তার অনুসারীদের দখলে চলে যাবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, প্রযুক্তি থেকে শুরু করে বিশ্ব শাসন ব্যবস্থা, এই সবকিছু তারা নিয়ন্ত্রণ করবে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো তাদের হাতে প্রকৃতি বা আবহাওয়ার নিয়ন্ত্রণ চলে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আমার আলাদা লেখায় এ বিষয়ে তথ্য প্রমাণসহ উল্লেখ আছে। আর এই সবকিছু হবে নানা বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যানারে। এগুলো কাব্বালা সাইন্স বা অকাল্ট সাইন্স কিনা তা আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব না।
এআই (আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স), কোয়ান্টাম কম্পিউটার, কোয়ান্টাম ব্যাংকিং বা কোয়ান্টাম ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, কোয়ান্টাম সাইন্সের ব্যানারে বিজ্ঞানের চূড়ান্ত রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছি। এগুলোর আউটপুট হবে কল্পনাতীত। আবার বিপরীত চিত্রে এগুলোর মাধ্যমে যে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে তা ট্রিপল সিক্স শাসন ব্যবস্থার চূড়ান্ত রূপ হিসেবে ধরা যায়। আবিস্কার নিয়ে কোন সংকীর্ণতা নাই কিন্তু এগুলোর উদ্দেশ্য যদি হয় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শয়তানের ওয়ান ওয়ার্ল্ড প্রতিষ্ঠা করা, সেটা বিপদজনক।
অতীতে শক্তিশালী জাদুবিদ্যাকে পরাজিত করতে নবীদের অলৌকিক ক্ষমতা দান করা হয়েছিল। নিশ্চয় এরমাঝে শিক্ষনীয় নিদর্শন আছে। হযরত মূসা (আ.) এর লাঠির কাছে পরাজিত হয়েছিল ভয়ঙ্কর জাদুকরদের দল। কিন্তু জাদুর চর্চা কি সেখানেই থেমে গিয়েছিল নাকি এখনও আছে? থাকলে কি সেটা এখন চূড়ান্ত সাইন্সে পরিণত হয়েছে? হয়ে থাকলে এটা অপ্রতিরোধ্য ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না অলৌকিক ক্ষমতা নিয়ে আবার কেউ আসে। তিনি হযরত ঈসা (আ.)। সমাধান এখানেই।
GIPHY App Key not set. Please check settings