in

LoveLove AgreeAgree

গাজওয়াতুল হিন্দ, বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এবং আমাদের করণীয়

গাজওয়াতুল হিন্দ

শিরোনামে গাজওয়াতুল হিন্দ উল্লেখ করলেও যা নিয়ে আলোচনা হবে তার নাম আসলে জানা নাই। কিছু ঘটনাপ্রবাহের ইন্টারপ্রিটেশনের উপর ভিত্তি করে এই লেখা। সেটি যদি গাজওয়াতুল হিন্দের সাথে মিলে যায় তবে তাই। কারো কাছে এই লেখা অতিমাত্রায় কাল্পনিক, বানোয়াট, অনুমাননির্ভর ইত্যাদি মনে হতে পারে। তবে বরাবরের মতো সুনির্দিষ্ট কিছু ভিত্তির উপর লেখাটি তৈরি যার মধ্যে অন্যতম হলো ইতিহাস, ভূরাজনৈতিক দর্শন, প্রযুক্তির গতিপ্রকৃতি, এস্কেটোলজি, স্পিরিচুয়াল ইন্টারপ্রিটেশন এবং এসবকিছুর সাথে চলমান ঘটনাপ্রবাহের সংমিশ্রন। আশ্বস্ত করতে পারি যে এখানে নিছক অনুমাননির্ভর কোন কিছু নেই। তবে এমন কিছু বিষয় আছে যা একান্ত উপলব্ধি, তাই অনুরোধ থাকবে সেগুলো সরাসরি বিশ্বাস না করে অন্তদৃষ্টি দিয়ে বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে নিবেন। যদি সত্য হয় তবে মনে করবেন এটি কোন জ্যোতিষবিদ্যার চর্চা নয় বা অনুমাননির্ভর কথা নয় বরং উপরের সবকিছুর সংমিশ্রন।

ডার্ক ফোর্স

ডার্ক ফোর্স বলতে সাধারণত এমন এক ধরনের নেতিবাচক শক্তিকে বোঝানো হয় যা মানুষের চেতনা, মানসিক অবস্থা, বা আত্মার উপর প্রভাব ফেলে। ধর্মগ্রন্থ, মিস্টিসিজম এবং বিভিন্ন আধ্যাত্মিক দর্শনে এ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারনা পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের মতে আমাদের চারপাশে যাকিছু দেখা যায় তা মাত্র ১০℅ অথবা আরো কম। অর্থাৎ চোখের সামনে চেয়ার-টেবিল, কাঁথা-বালিশ, দরজা, জানালা ইত্যাদি যা কিছু দেখা যায় তা মাত্র ১০%। আর বাকি ৯০℅ দেখা যায়না, মানে বহু অদৃশ্য শক্তি আমাদের চারপাশে সবসময় ঘুরে বেড়ায় কিন্তু আমরা তা দেখতে পাইনা। যা দেখা যায়না তা এ্যান্টি ম্যাটার। এর মধ্যে থাকতে পারে ডার্ক ফোর্সের কার্যক্রম। এটিকে ডার্ক এনার্জি বা ডার্ক ম্যাটারও বলা হয়। ডার্ক ফোর্স বা অন্ধকার শক্তির সাথে যুদ্ধের গভীর সম্পর্ক আছে। বিশেষ করে শেষ জামানার যুদ্ধে ডার্ক ফোর্সের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ডার্ক এনার্জির চর্চা কারা করে চ্যাটজিপিটিকে এমন প্রশ্ন করা হলে উত্তরে NASA, CERN (European Organization for Nuclear Research), ESA (European Space Agency) এর মতো সংস্থাগুলোর নাম পাওয়া যায়। এছাড়া জ্যোতির্বিজ্ঞানী, তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী, কসমোলজিস্ট এবং বিশ্বের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ ডার্ক এনার্জির চর্চা করে বলেও উল্লেখ করে চ্যাটজিপিটি।

বিজ্ঞানীরা ডার্ক এনার্জির আভিধানিক সংজ্ঞাকে ভিন্নভাবে মানুষের কাছে ব্যাখ্যা করে যা প্রকৃত বিষয়ের সাথে মিল নাই। এসব বিজ্ঞানীরা বলছে ডার্ক এনার্জি হলো এক রহস্যময় শক্তি যা মহাবিশ্বকে প্রসারিত করতে সাহায্য করে।

আসলে শয়তানের পূজারি একটা শ্রেণী তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য এই শক্তিকে ব্যবহার করে। এই শক্তির চর্চাকারী মানুষ এবং জ্বীনরা মিলে সম্মিলিত বাহিনী হলো ডার্ক ফোর্স। যুদ্ধক্ষেত্রে ডার্ক ফোর্সের ভূমিকা অতীতেও ছিল। বর্তমানে এই শক্তির ব্যাপক সম্প্রসারণের কারণে প্রয়োগও অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। ভারত উপমহাদেশের সম্ভাব্য চূড়ান্ত রূপ ধারণ করতে যাওয়া যুদ্ধের সূচনা ডার্ক ফোর্সের আক্রমণের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।

ডার্ক ফোর্সের আনুষ্ঠানিক আগমনের আলামত সম্পর্কে কিছুটা ধারনা নেয়ার চেষ্টা করা যাক। ফেসবুকে এটি অনেক আগেই শেয়ার করা ছিল। এখানেও প্রাসঙ্গিক জন্য আবারো শেয়ার করছি –

➥ এমন কিছু দুর্ঘটনা বা অমানবিক ঘটনা ঘটতে দেখা যা স্বাভাবিক সেন্স দিয়ে মেনে নেয়া প্রায় অসম্ভব। এমন কিছু দুর্ভোগ, দুর্যোগ যা হওয়ার কথা ছিল না। অস্বাভাবিক মনে হলেও সেটি হচ্ছে বা হবে।

➥ অতিপ্রাকৃত ঘটনা। অন্তদৃষ্টি সম্পন্ন খুব মানুষ হয়ত এগুলো অনুধাবন করবে। কিন্তু এমন ঘটনা ঘন ঘন ঘটতে থাকবে।

➥ এই অঞ্চলে আল্টিমেট লক্ষ্য ডিপপুলেশন, সে লক্ষ্যে তারা এগিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে দুর্যোগ, দুর্ভোগ, মহামারি, সংঘাত ইত্যাদির পিছনে মনে হতে পারে কোন অদৃশ্যের হাত আছে। মনে হবে এগুলোতো হওয়ার কথা না কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন হয়ে যাচ্ছে!

➥ ক্ষণে ক্ষণে মানুষকে বিভ্রান্ত হতে দেখা যেতে পারে। অনেক জ্ঞানী, বুজুর্গ, আলেম, বিশ্ব বরেণ্য দা’য়ী বলে যাদের জানি হঠাৎ তাদেরকেও বিভ্রান্ত মনে হতে পারে।

➥ আমল ও জানার ভান্ডার সমৃদ্ধ না হলে যেকোন সময় নিজেরাও বিভ্রান্তিতে পরে যেতে পারি। এজন্য সর্বদা আল্লাহ’র অনুগ্রহ কামনা করা এবং এ সময়ের জন্য বিশেষ কিছু আমল, জিকির সর্বদা করা প্রয়োজন।

➥ বড় কোন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটলে দিন তারিখ খেয়াল রাখবেন। স্যাটানিক রিচুয়ালের অনেক আলামত আছে যার মধ্যে অন্যতম হলো নির্দিষ্ট কিছু দিন তারিখ ও সংখ্যার হিসাব। মানুষের কাছে মনে হবে এটাতো নিছকই দুর্ঘটনা। কিন্তু হতে পারে এর পিছনে ডার্ক ফোর্সের হাত আছে। ৩, ৬, ৮, ৯, ১৮ ইত্যাদি সংখ্যা এবং এগুলোর যোগফল ও ভগ্নাংশ তাদের বিশেষ সংখ্যার মধ্যে পরে।

➥ ট্রিপল সিক্স (৬৬৬) সংখ্যার প্রয়োগ বাড়তে পারে। এখানে কিছু সূক্ষ্ম ধোঁকার প্রয়োগ হয়। যেহেতু মানুষের মাঝে ট্রিপল সিক্সের ব্যাপারে ভীতি আছে বা জানে এ সম্পর্কে তাই রূপক অর্থে বা ভিন্নভাবে এর প্রয়োগ হয়। যেমন ট্রিপল জিরো। ট্রিপল জিরোকে আঙ্গুল দিয়ে ট্রিপল সিক্স হিসেবে দেখানো হয়। ডিপ ফেক।

➥ ব্লাক মাজিক বা কালো যাদুতে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।

➥ ডার্ক ফোর্সের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো এলজিবিটিকিউ। তারা জানে স্পিরিচুয়াল শক্তিকে নষ্ট করতে এর চেয়ে মোক্ষম অস্ত্র আর হয়না এবং এর মাঝে ধ্বংস নিহিত। তারা মনে করে এই ধ্বংসের পর নতুন বিশ্ব প্রতিষ্ঠিত হবে। আসলে তা ভুল। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটিকে আটকানো অনেক কঠিন। অনেক বড় শক্তি এই মতবাদকে প্রতিষ্ঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। সাথে অদৃশ্য অন্ধকার শক্তি।

এই শক্তির সাথে ভারত উপমহাদেশের চূড়ান্ত যুদ্ধ ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত যেই শক্তি দ্বারা ইতিমধ্যে আমরা আক্রান্ত হয়েছি। এটি যদি গাজওয়াতুল হিন্দ হয় তবে তাই।

গাজওয়াতুল হিন্দ

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে খুব সংক্ষেপে গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে প্রারম্ভিক কয়েকটি বিষয় লেখার ধারাবাহিকতায় উল্লেখ না করলে নয়। গাজওয়াতুল হিন্দ হলো মুশরিকদের সাথে মুমিন, মজলুমদের সাথে শোষক, আলোর সাথে অন্ধকার, হকের সাথে বাতিলের যুদ্ধ। এখানে গাজওয়া অর্থ যুদ্ধ এবং হিন্দ বলতে আরব বণিকরা সিন্ধু নদকে বুঝাতেন। অর্থাৎ সিন্ধু নদের অঞ্চলে যে যুদ্ধ সংঘঠিত হবে সেটিই গাজওয়াতুল হিন্দ। এক কথায় শেষ জামানায় ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ হলো গাজওয়াতুল হিন্দ।

এই যুদ্ধে ধুতি পরা অনেকে যেমন হকের দলে যুক্ত হতে পারে আবার নামধারী মুসলমানদের অনেকে বাতিলের কাতারে যাবে। এটি এমনই জটিল সমীকরণ হতে পারে যেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে নেতৃস্থানীয় মুসলমানদের বেশিরভাগই মুশরিকদের দলভুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে এবং কে হক কে বাতিলের দলে তা সহজে চিহ্নিত করা যাবে না। কারণ মুশরিকদের চিহ্নিত করা সহজ হলেও মুসলমান ছদ্মবেশীদের চিহ্নিত করা অনেক কঠিন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুসলিম পাপেট এবং তাদের অন্ধ অনুসারীরা অনেক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে এই যুদ্ধে। আপাতদৃষ্টিতে শুরুর দিকে এটি একটি সাজানো যুদ্ধ হতে পারে যেখানে পক্ষ বিপক্ষ উভয়ই একই শ্রেণী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের উদ্দেশ্য হলো ডিপপুলেশন তথা নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার বাস্তবায়ন করা। কিন্তু এস্কেটোলজিক্যাল বিশ্লেষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে এই লড়ায়ই স্কেল আপ হতে হতে একটা পর্যায়ে মুশরিক ও মুমিন, আলো ও অন্ধকারের লড়াইয়ে রূপ নিবে। এটিই গাজওয়াতুল হিন্দ।

গাজওয়াতুল হিন্দ কি শুরু হয়ে গেছে?

এই সময়ের বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হলো – গাজওয়াতুল হিন্দ কি শুরু হয়ে গেছে? প্রথমত পবিত্র কোরআন, হাদিস, বাইবেল বা তাওরাতে উল্লেখিত যুদ্ধের দিনক্ষণ কখনও ঘোষণা করে শুরু হবে না বা সংবাদ সম্মেলন করে কেউ দিন তারিখ ঘোষণা করবে না। এগুলো সংশ্লিষ্ট গ্রন্থ পর্যালোচনা করে সিন্ধান্তে আসার বিষয়। যেমন মালহামা বা আর্মাগেডন কখন শুরু হয়েছে বা হবে তা ধর্মীয় গ্রন্থ পর্যালোচনা করে সিন্ধান্তে আসার বিষয়। গাজওয়াতুল হিন্দের বেলায়ও ঠিক একই কথা প্রযোজ্য। অনেকে দক্ষিণ এশিয়ায় চলমান সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মতো ঘটনাগুলোকে গাজওয়াতুল হিন্দের শুরু হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন ইতিমধ্যে। কিন্তু এমন কোনো নির্ভরযোগ্য প্রমাণ বা ইসলামী উৎস নেই যা নিশ্চিতভাবে স্বীকৃতি দেয় যে গাজওয়াতুল হিন্দ শুরু হয়ে গেছে। আবার সিন্ধান্তে পৌছাতে পারলেও তা কখনও স্বীকৃতি পাবে না এটাই স্বাভাবিক। যুদ্ধ চূড়ান্ত রূপ ধারন করলে তখন হয়ত মানুষ বুঝতে পারবে, তার আগে কোনটা মালহামা কোনটা গাজওয়াতুল হিন্দ তার কোন চূড়ান্ত সিন্ধান্ত আসবে না। এখানে নিজস্ব কিছু পর্যালোচনা শেয়ার করব, যে যেভাবে খুশি গ্রহণ/বর্জন করতে পারে।

বিশ্ব একটি সুপরিকল্পিত মহাযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুনির্দিষ্ট একটি টাইমলাইনও হয়ত চূড়ান্ত করা আছে যা সম্পর্কে আমরা জানিনা। তবে সংশ্লিষ্টরা বুঝে গেছে যে এটি আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। গাজওয়াতুল হিন্দ বা ভারত উপমহাদেশের চূড়ান্ত যুদ্ধের সাথে সারা বিশ্বের যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধের সাথে এই যুদ্ধ একই সুতোয় গাঁথা। এই লেখায় সংঘাতের পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ে জানতে পারবেন। এখানে তিন পরাশক্তি আমেরিকা, চীন ও রাশিয়ার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি যেখানে আমেরিকা ও চীনের সাথে ব্যতিক্রম কেবল রাশিয়া। রাশিয়া পায়ে হেটে এগিয়ে যাচ্ছে আরেক পরাশক্তির দিকে। একটি মহাযুদ্ধের দিকে। যেখানে আমেরিকা ও চীন তাদের বিশাল বাহিনী নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটে যাচ্ছে। একটি মহাযুদ্ধের দিকে। এটি স্পিরিচুয়াল উপলব্ধি যেটিকে অনেকভাবে ব্যাখ্যা দেয়া যায়। হয়ত এই গতির মধ্যেও জয় পরাজয়ের হিসাব নিহিত আছে। যত গতি তত বেশি ক্ষতি! তবে এই লেখায় বিষয়টি উল্লেখ করার কারন হলো দ্রুতগতির বিশাল একটি বাহিনী দ্বারা আমরা আক্রান্ত হয়েছি জানি গত ৩/৪ আগষ্ট ২০২৪ সালে। তারা সফলভাবে প্রাথমিক মিশন সম্পন্ন করে সেলিব্রেশন করে ৯ আগষ্ট। সেসময় ফেসবুকে এটি নিয়ে একটি লেখাও শেয়ার করি। যারা নিয়মিত লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন তাদের বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা না। শুধু বাংলাদেশ নয় বরং এর সাথে ভারত উপমহাদেশ চূড়ান্তভাবে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জড়িত। এভাবেও বলা যায় শুরুটা বাংলাদেশকে দিয়ে হলেও টার্গেট মূলত গোটা এশিয়া। শুরুতে দ্বিধাদ্বন্দ থাকলেও এখন পুরো ব্যাপারটি স্পষ্ট হয়ে গেছে। প্রচলিত পাণ্ডিত্ব বা বিজ্ঞান দ্বারা এর ব্যাখ্যা খোঁজার চেষ্টা করে লাভ হবে না। আবারো দেড় বছর ধরে চালানো সেই পুরনো রেকর্ড – “ফিলিস্তিনের পরবর্তী ময়দান হবে এশিয়া। এটি বাংলাদেশ থেকে শুরু হতে পারে অথবা যেখান থেকেই শুরু হোক বাংলাদেশ আক্রান্ত হবে।” এই ভূখন্ড ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে আক্রান্ত হয়ে গেছে। এটিই যদি গাজওয়াতুল হিন্দ হয় তবে তাই।

একটি সাধারণ প্রশ্ন – এশিয়ায় জিইয়ে রাখা সব অস্থিরতা কিভাবে একযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো? চীন, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, মায়ানমার এবং বাংলাদেশে চলমান এসব উত্তেজনা কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে? ভূরাজনীতি সম্পর্কে ন্যূনতম খবর রাখা যেকারো পক্ষে বলে দেয়া সম্ভব যে, চূড়ান্ত সংঘাতে না জড়ানো পর্যন্ত এর সমাপ্তি ঘটার সম্ভাবনা আপাত আর নাই। এই সংঘাতই যদি গাজওয়াতুল হিন্দ হয় তবে তাই।

এই সংঘাতে মুশরিক অথবা ছদ্মবেশী মুসলিম পাপেটদের পর্দার আড়ালে মূল নকশাকারী কিন্তু একটা শ্রেণী যারা দূর থেকে সবকিছুর তদারকী করে যাচ্ছে। ধাপে ধাপে একটার পর একটা সুপরিকল্পিত ঘটনার মাধ্যমে সংঘাতকে স্কেল আপ করা হচ্ছে। কখনো মায়ানমার-বাংলাদেশ, কখনো ভারত-বাংলাদেশ, ভারত-পাকিস্তান, আফগানিস্থান-পাকিস্তান, ভারত-চীন, কখনো চীন-আমেরিকা। রাশিয়াও ধীর পায়ে হেঁটে আসছে। এটিই যদি গাজওয়াতুল হিন্দ হয় তবে তাই। নাম যেটাই হোক, এটি প্রক্সি ওয়্যার টুর্নামেন্টের শেষ ম্যাচ। এরপর উল্কাপাত।

উল্কাপাত

মাত্র কিছুদিন আগের খবর। বিশ্ব মিডিয়াতে এশিয়ায় একটি উল্কাপাতের খবর ফলাও করে প্রচার করা হয়। ২০৩২ সালের ডিসেম্বরে এটি পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষের ব্যাপারে বলা হচ্ছে। কেউ খেয়াল করলে জানবেন যে একটি উল্কাপাতের বিষয় আমার লেখায় উল্লেখ ছিল। যার মানে খুজে পাই ইনসাফ বা ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হওয়া। সেটি যদি কৃত্তিমভাবে ঘটানো হয়ে থাকে তবুও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হওয়ার আলামত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। খবরে বলা হচ্ছে হিরোশিমার চেয়ে ৫০০ গুণ বেশি ধ্বংস ক্ষমতা আছে এই গ্রহাণুর। বিজ্ঞানিরা এটির নাম দিয়েছেন সিটি কিলার। পৃথিবীর সাথে যার ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা আছে মাত্র ২ শতাংশ। তবে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মতে যত সময় যাচ্ছে ততই এই গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সিটি কিলার নাম, সম্ভাব্য আক্রান্ত দেশের তালিকা এবং সময়; এই সবকিছুই যেন সন্দেহ এবং রহস্যে ঘেরা!

প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল সংঘর্ষের এই সম্ভাবনা ১ শতাংশ কিন্তু মাসখানেকের মধ্যে এই সম্ভাবনা বেড়ে ২ শতাংশ হয়। ২০২৮ সালে গ্রহাণুটি পুনরায় দৃশ্যমান হওয়ার কথা। সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান, ভেনিজুয়েলা, ইকুয়েডর এবং কলম্বিয়া। প্রসঙ্গত এই ধরনের গ্রহাণু পৃথিবীতে অতিতেও আছড়ে পড়েছে এবং ভূমণ্ডলের পরিবর্তনে বড় ভূমিকা পালন করে। আবার সম্ভাবনার বহু খবর প্রায় প্রকাশিত হলেও সেই সম্ভাবনা আর বাস্তবে দেখা মেলেনা। কিন্তু এবারের খবরটিকে আমলে নেয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও সময় বিবেচনায় এটি গুরুত্বপূর্ণ। ক্লাব অফ রোমের গ্রেটার ম্যাপ বাস্তবায়নে এই ধরনের উল্কাপাত ভূমিকা রাখতে পারে। এটি আদৌ হবে নাকি সম্ভাবনায় রয়ে যাবে? এটি প্রকৃতিক নাকি কৃত্তিমভাবে ঘটানোর পায়তারা চলছে?

অতি নিকট ভবিষ্যতে এ ধরনের একটি বড় উল্কপাতের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে ইন শা আল্লাহ, স্পিরিচুয়াল ইন্টারপ্রিটেশনের যে কথা এতদিন বলে আসছি। ভারত উপমহাদেশের ভয়াবহতম যুদ্ধের সাথে এই উল্কাপাতের সম্পর্ক আছে। জানিনা এর মাধ্যমে শয়তান তার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে নাকি এটি এই ভূখণ্ডে ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আলামত। তবে ব্যাখ্যা হতে পারে, ২০২৪ সালে যেসব সাপের ছোবলে এই ভূখণ্ড আক্রান্ত হয় তা চলমান থাকবে ও স্কেল আপ হতে হতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছাবে এবং সমাপ্তি ঘটতে পারে উল্কাপাতের মাধ্যমে। এটি নিয়ে ডার্ক ফোর্সের সম্মিলিত বাহিনীর যতই পরিকল্পনা থাক তা বুমেরাং হয়ে তাদেরই পরাজয়ের কারণ হতে পারে। কারণ হাদিস অনুযায়ী চূড়ান্ত ফলাফল এটাই যে ধ্বংসস্তুপ থেকে ঘুরে দাড়ানো একদল মজলুমকে আল্লাহ বিজয় দান করবেন, ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত হবে ইন শা আল্লাহ।

বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট

মধ্যপ্রাচ্যের সাথে এই উপমহাদেশের সম্ভাব্য দাঙ্গা হাঙ্গামার স্পষ্ট পার্থক্য আছে। কারণ উদ্দেশ্য ভিন্ন। শ্যামদেশে তাদের ভূমি দরকার কিন্তু এই অঞ্চলে ভূমি না, জনসংখ্যা হ্রাস অর্থাৎ ডিপপুলেশন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে। জনসংখ্যা বলতে এখানে মুসলিম জনসংখ্যা হ্রাসের মধ্য দিয়ে নতুন একটি মানচিত্রের জন্ম দিতে চায়। ১৯৭৪ সালে ক্লাব অফ রোমের প্রটোটাইপ মানচিত্র উপস্থাপন করে বিশ্বকে নতুন ১০টি বৃহৎ রিজিওনাল অঞ্চলে বিভক্তির উল্লেখ পাওয়া যায় যে মানচিত্রের মাধ্যমে নতুন বিশ্বের প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে অর্থাৎ নিউ ওয়াল্র্ড অর্ডার বাস্তবায়নের চেষ্টা হবে। বিবলিক্যাল প্রফেসিতে এই মানচিত্রের উল্লেখ পাওয়া যায় যেখানে নতুন ১০টি রাজার কথা বলা আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের দেশগুলো মিলে একটি রাজা। গ্রেটার ভারত বলে যে আওয়াজ শোনা যাচ্ছে এটিই সেই ক্লাব অফ রোমের তৈরি নতুন মানচিত্রের মাস্টারপ্লান। এটি বৃহৎ পরিকল্পনা। এখানে বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে ছোট ছোট কিছু ব্যাপার উল্লেখ করার চেষ্টা করব। মধ্যপ্রাচ্যের সাথে উপমহাদেশের পার্থক্য যেমন স্পষ্ট তেমনি আবার বাংলাদেশের সাথে অন্যদেশ বিশেষ করে ভারত বা পাকিস্তানের সাথে সুস্পষ্ট পার্থক্য আছে। পাকিস্তান ও ভারতের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ এই লেখায় আছে। সেখানে যেসব পরিকল্পনার তথ্য পাওয়া যায় তার থেকে বাংলাদেশের নিশানা ভিন্নভাবে সাজানো। কিন্তু যতটুকু আলামত পাওয়া যায় তাতেই যে পরিণতি হতে পারে তা সামলানোর কোন অবস্থা আমাদের নাই। উল্লেখ্য এখানে সম্ভাব্য বলার কারণ চূড়ান্ত পরিণতি কেবলই আল্লাহ জানেন। এর মানে এই না এগুলো নিছক অনুমাননির্ভর বানোয়াট গল্প। তাদের টার্গেট এই অঞ্চলের মুসলিম দেশ। কিন্তু বাস্তবতা হলো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান এই তিন মুসলিম দেশকে টার্গেট করতে গেলে ভৌগলিক ও রণকৌশলগত কারণে ভারত তথা পুরো এশিয়া আক্রান্ত হয়ে পরবে। এর একটা কারণ হলো পাকিস্তান পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ। আরেকটি কারণ অপ্রতিরোধ্য আফগানিস্তান। ফলাফল প্রাথমিকভাবে তাদের ডিপপুলেশন এজেন্ডা বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু ভারতসহ পুরো দক্ষিণ এশিয়া জড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ খুব শীঘ্রই চতুর্মূখি ফিতনার কবলে পরতে যাচ্ছে যা কোন একটি ফেসবুক পোস্টে ছোট্ট করে উল্লেখ করি কয়েকমাস আগে যার বিস্তারিত ব্যাখ্যা হতে পারে এরকম:

➥ কৃত্তিমভাবে তৈরি করা জলবায়ু পরিবর্তন জনিত চরম বিপর্যয়ের সম্মুখিন হতে পারে বাংলাদেশ। সারাবিশ্ব একই বিপর্যয়ের মুখে পরতে পারে। বৃষ্টিপাত, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, খড়া থেকে শুরু করে ভূমিকম্প পর্যন্ত কৃত্তিমভাবে ঘটানোর প্রযুক্তিকে এখন পর্যন্ত কন্সপাইরেসি থিউরি হিসেবে গুলে খাওয়াতে তারা সফল হয়েছে। অথচ শুধু বাংলাদেশে নয় বিশ্বের সবখানে সামরিক অস্ত্র হিসেবে আবহাওয়া পরিবর্তন প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে এবং সামনে আরো ব্যাপকভাবে হবে। ক্লাব অফ রোমের গ্রেটার রিজিওন্যাল ম্যাপের আকৃতি দেয়া হবে কৃত্তিম ভূমিকম্প এবং উল্কাপাতের মাধ্যমে এমনটাও মনে করা হয়।

➥ প্রযুক্তির দ্বারা আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ফসলের ক্ষতি করে কৃত্তিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করা হতে পারে। সামনের দিনগুলোতে আমদানি রপ্তানি চরমভাবে সংকীর্ণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, যেটি দুর্ভিক্ষের আরো একটি কারণ হতে পারে। যেসব দেশ নিজে উৎপাদনে বার্থ হবে সেখানে দুর্ভিক্ষ চরম আকার ধারন করবে। বাংলাদেশ আমদানী নির্ভর দেশ হওয়াতে এই সম্ভাবনা প্রবল।

➥ ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন, বৈশ্বিক সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ও বিচারহীনতার ফলে যে নৈতিক অবক্ষয় হয় তার চরম পরিণতি হলো সামাজিক অস্থিরতা। কে কাকে কি কারণে মারবে তার কারণ যে মারবে সে যেমন জানবে না, যে মার খাবে সেও জানবে না।

➥ টার্গেটেড কিলিং। প্রযুক্তির সহায়তায় নির্দিষ্ট ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করে হত্যা নির্যাতন বাড়তে পারে। ইসলামিক চিন্তাবিদ, এক্টিভিস্ট, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদি মানুষ থেকে শুরু করে নিরীহ মানুষরা এই টার্গেটের শিকার হতে পারে। নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের লক্ষ্য অর্জনে এখন যেই ইসলামিক সেন্টিমেন্ট, ব্যক্তি ও গ্রুপকে ব্যবহার করা হচ্ছে, ধীরে ধীরে এরাই আবার টার্গেটে পরিণত হবে। কারণ খুব সিম্পল। ৯০ থেকে শুরু হওয়া এনডব্লিউও এর উদ্দেশ্যই নিরীহ মুসলিম নিধন। আর কৌশল হলো পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে মুসলমানদের একপক্ষকে দিয়ে অপরপক্ষকে ধ্বংস করা। ডেভিল হান্টের মতো অপারেশনের গতিপ্রকৃতি উল্টে যেতে পারে। কারণ ডেভিল সবসময় নিজেকে পীর মনে করে এবং উল্টা মজলুমদেরকেই ডেভিল মনে করে।

➥ এ টিম এক্টিভেটেড থাকলে ছদ্মবেশি বি টিমও প্রস্তুত আছে। এ টিমের কার্যক্রমে সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পরলে আবারো একটা সাজানো আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এ টিমকে পরাস্ত করার নাটকের মাধ্যমে বি টিম চলে আসতে পারে যারা আরো বেশি ছদ্মবেশি এবং আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের কাছে এদের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা থাকবে। আবারো মানুষ খুশিতে বরণ করে নিবে, মিষ্টির দোকান ফাঁকা হয়ে যাবে। তবে হাতে সময় অনেক কম, তাই এই পয়েন্টটি বাস্তবায়নের দিকে না গিয়ে পরিস্থিতি দ্রুত ভিন্ন দিকেও মোড় নিতে পারে। চক্রান্ত ধরতে সম্ভাব্য পরিণতি হিসেবে অপশনটি মাথায় থাকলে ক্ষতি নেই। কোন সন্দেহ নেই যে প্লান এ, বি, সি ইত্যাদি প্রস্তুত আছে। পরিস্থিতি বুঝে উপযুক্ত প্লান এক্টিভেট করা হবে। আসলে আমরা গাফেল। এ সময় একটার পর একটা ফিতনা আসবে। মানুষ ভাববে এটা বুঝি শেষ হয়ে গেলো। আসলে পরবর্তী ফিতনা হবে আগের চাইতে বহুগুণে ধ্বংসাত্মক। এটি হাদিসের রেফারেন্স। কাজে ‘আগেই ভালো ছিলাম’ কথাটি শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত প্রযোজ্য থাকবে।

➥ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তির সময় এখন। কোন্ ইতিহাস কোন্ মাত্রায় পুনরাবৃত্তি ঘটবে সেটি অনুধাবন করার বিষয়। এটি একাত্তরের পুনরাবৃত্তির সময়। ইতিহাস সাক্ষি, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী আমাদের ভরসার জায়গা। বর্তমান অবস্থান যেদিকেই থাক, চূড়ান্ত পর্যায়ে বাংলাদেশ সঠিক মেরুকরণের দিকে যাবে এমনটা আশা রাখা যায়। পরিস্তিতি টালমাটাল হয়ে পরলে ঠিকই সৎ ও দেশপ্রেমিক যোদ্ধারা দেশকে রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পরবে।

➥ বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার মতো কোন পরিকল্পনার আলামত পাওয়া যায়নি যেমনটা পাকিস্তানের ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে। অথবা গ্রেটার ম্যাপের অন্তর্ভূক্ত করতে বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। অথবা ভৌগলিক ও এখানকার মানুষের সহিষ্ণু আচরণ ও চারিত্রিক বৈশিষ্টের কারণে সেটি সম্ভব নয় বলে পরিকল্পনাকারীরা সে পথে যায়নি। আর এজন্যই গৃহযুদ্ধ, টার্গেটেড কিলিং এবং নানারকম ফিতনার মাধ্যমে জনসংখ্যা হ্রাস করে টিকে থাকা মানুষদের নিয়ে নতুন বিশ্ব গড়ার পরিকল্পনা থাকতে পারে।

➥ এই টিকে থাকা মানুষদের অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক জীবনকে প্রযুক্তির শেকলে এমনভাবে বেধে ফেলা হবে যেন তাদের চিন্তা চেতনার উপরও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা যায়। এআই, নিউরালিংক, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি ইত্যাদি তার উদাহরণ। সারা বিশ্বে টিকে থাকা মানুষদেরকে নিয়ে তাদের একই ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে।

➥ পার্বত্য এলাকা এবং সংবিধান সংস্কার এই মূহুর্তে দুটি স্পর্শকাতর ইস্যু। পাবলিক সেন্টিমেন্ট বুঝে লোক দেখানো কিছু কাজের মাধ্যমে মানুষের মনোযোগ ভিন্নদিকে রেখে লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা হতে পারে। প্রকৃত অর্থে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের লক্ষ্য বাস্তবায়নের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংবিধান প্রস্তুত করা হবে। নারীবাদি ইস্যু এবং তার আড়ালে এলজিবিটিকিউ এর মতো একাধিক ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বিরোধী এজেন্ডা সংবিধানের মূল ভিত্তির সাথে যুক্ত হবে শব্দের ম্যারপ্যাচে। কাজেই সাধারণ মানুষের মাঝে পক্ষ বিপক্ষ তর্ক চলবে।

➥ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং রণকৌশলগত কারণে বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকা ও ভারতের সেভেন সিস্টার্সের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ বহিঃশক্তির হাতে চলে যেতে পারে যেটি ইতিমধ্যে দিবালোকের মতো পরিষ্কার। এখানেই শেষ নয়। পরাশক্তির সামরিক ঘাটি মানে হলো শুধু বাংলাদেশ নয় উত্তপ্ত হবে পুরো এশিয়া।

➥ সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে একক পরাশক্তিকে খুশি করা গেলেও চীনের যে বাণিজ্যিক ও ভৌগলিক স্বার্থ চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হবে তার জবাবে তাদের প্রক্সি বাহিনীকে ব্যাপকভাবে প্রস্তুত করা শুরু করবে। ধীর পায়ে এগিয়ে আসবে রাশিয়া। ফলাফল হলো পরাশক্তিদের প্রক্সি যুদ্ধের নতুন ময়দান হলো ভারত উপমহাদেশ। মূল ফ্রন্ট কাশ্মীর, মায়ানমার, ভারত, পাকিস্থান হলেও পুরো দক্ষিণ এশিয়া জড়িয়ে যাবে। সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশ আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা সহজেই অনুমেয়।

➥ কাশ্মীর, ভারত, পাকিস্তানকে ঘিরে আকষ্মিক বড় যুদ্ধের পার্শপ্রতিক্রিয়ার ঝুকির মধ্যে আছে বাংলাদেশ। সমর বিশ্লেষকদের মতে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ট্রেডিশনাল ওয়্যারফেয়ারের মতো হওয়ার সম্ভাবনা কম। দুই দেশই পরমাণু শক্তিধর হওয়ায় তা প্রয়োগের সম্ভাবনা অনেক বেশি।

এখানে প্রতিটি কথা তাদের পরিকল্পনা হিসেবে উল্লেখ করি। চূড়ান্তভাবে কি বাস্তবায়ন হতে পারে এস্কেটোলজিক্যাল গবেষণা থেকে প্রাপ্ত সেসব পরিণতির কথা একাধিক লেখায় পাবেন। মোট কথা হলো ধ্বংস করা পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনা ঠিক থাকবে।

আমাদের করণীয়

লেখাটি যারা পড়বেন ধারনা করি তারা অনেকেই ইসলাম এবং সামরিক বিষয়ে ভালো জ্ঞান রাখেন। করণীয় কি সে সম্পর্কেও খুব ভালো জানেন। এখানে শুধুমাত্র যে বিষয়গুলো নিজেকে দিয়ে উপলব্ধি করতে সক্ষম হই তেমন কিছু করণীয় বিষয় শেয়ার করার চেষ্টা করব। এছাড়া বিষয়গুলো সবাই জানি। শুধু মনে করিয়ে দেয়া যে এগুলো পালন করা ছাড়া এখন কোন উপায় নাই।

পাহাড় এবং গ্রাম বাসস্থান হিসেবে এই সময়ের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা। কৃষি কাজ এই সময়ের সবচেয়ে নিরাপদ পেশা। সামনের দিনগুলোতে প্রযুক্তি থেকে যত দূরে থাকা যায় জীবন তত নিরাপদে থাকবে। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে। শারিরীক ফিটনেস বাড়াতে হবে। জীবনের চাহিদাকে ন্যুনতম পর্যায়ে নিয়ে আসা যেন হঠাৎ যেকোন খারাপ পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া যায়। এমনভাবে ট্যাপের পানি ব্যবহার করুন যেন ট্যাঙ্কিতে পানি প্রায় শেষ পর্যায়ে, যতটুকু আছে তা দিয়েই প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করতে হবে। অর্থাৎ মিতব্যায়ি হতে হবে। সপ্তাহে দুইদিন রোজা রাখার মাধ্যমে ক্ষুধার সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেয়া সম্ভব। সম্ভাব্য খারাপ পরিস্থিতিতে এগুলোই বেচে থাকার জন্য নির্দেশিত পথ। সামরিক, মানসিক, শারীরিক, অর্থনৈতিক প্রস্তুতি নিয়ে ইতিমধ্যে অনেক কনটেন্ট তৈরি হয়েছে। নেট সার্চ করলেই পাবেন। এগুলোর বাহিরে ভিন্ন কিছু বিষয়ের উপর জোর দেয়ার চেষ্টা করব।

আমাদের করণীয় কি সে সম্পর্কে ধারনা নেয়ার জন্য হযরত মুহাম্মদ সা. এর নবুয়ত প্রাপ্তি থেকে মক্কা বিজয় পর্যন্ত সময়ের প্রাসঙ্গিক দিকগুলো পর্যালোচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়কালের মধ্যে তিনি যে পরিস্থিতিতে যে ধরনের সিন্ধান্ত নিয়েছেন, আমাদের ঠিক একই ধরনের সিন্ধান্তে আসতে হবে। ইসলামের শুরুর দিকে মক্কার জুলুম নির্যাতনের যে সময় পার হয়েছে মুসলিম বিশ্ব সেরকম একটা সময় পার করছে। কাজেই সেই সময়ের প্রেক্ষিতে প্রিয় নবী মুহাম্মদ সা. এর নেয়া সিন্ধান্তগুলো আমাদের এই সময়ের আদর্শ হওয়া উচিত। পরিস্থিতি যেদিকে যায় সেদিকে গা ভাসানো যাবে না। সবখানে পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে নতুন বিশ্বকে (নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার) প্রস্তুত করার জন্য, মজলুমদের মুক্তির জন্য নয়।

চক্রান্ত বুঝতেই হবে

অন্তর্জালের মতো চারপাশে চক্রান্তের জাল বোনা আছে। যে চক্রান্তকে ঘোলাটে করতে তারা কন্সপাইরেসি থিউরি নামক কনসেপ্টের জন্ম দেয়। যে থিউরি দিয়ে এমন দৃশ্যপটের উদ্ভব ঘটানো হয় যেখানে সত্য ও মিথ্যাকে চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পরে। দাজ্জালের ধোকা সম্পর্কে সচেতন না হলে এ ধরনের দৈত্য দৃশ্যপট থেকে সত্য বের করে আনা অনেক কঠিন। কারণ তারা সেই পরিকল্পনা এমনভাবে সাজায় যা পুরোটাই ধোকা কিন্তু তা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ থেকে যায়। সচেতনভাবে বা অজ্ঞতার কারণে মানুষ সেই বিতর্কে জড়িয়েও পরে। যেমন গ্রেট রিসেট প্রকল্প নিয়ে বিতর্কের জের ধরে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম বিশ্বের সচেতন মানুষদের কাছে চরমভাবে সমালোচিত হয় এবং তাদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তাদের লোগো নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। নিচের ছবিটি ভালো করে লক্ষ্য করলে সত্য মিথ্যার প্যারাডক্সে ঢুকে যাবেন। কেউ বলে লোগোর ভিতর দাজ্জাল বা অ্যান্টিক্রাইস্টের চিহ্ন ৬৬৬ লুকানো আছে। কেউ কন্সপাইরেসি থিউরি বলে উড়িয়ে দেয়। আসলে দাজ্জালিক চক্রান্ত এবং ডিপ ফেক সম্পর্কে ধারনা না থাকলে এ সময়ের ছোট ছোট বিষয়েও সঠিক সিন্ধান্তে পৌছানো কঠিন। বড় বড় চক্রান্তের গোলকধাঁধা কতটা গভীর হতে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এসব চক্রান্ত সম্পর্কে ধারনা না থাকলে তুখর বুদ্ধিমান মানুষ বা বিশ্ববরেণ্য আলেম, যেকেউ বিভ্রান্তিতে পরে ভুল সিন্ধান্ত নিতে পারে। কাজেই সঠিক সিন্ধান্ত নিতে হলে চক্রান্তের শেকর বুঝতেই হবে এবং এর জন্য যে অন্তদৃষ্টি প্রয়োজন তার কোন বিকল্প নাই।

ভারত উপমহাদেশের সম্ভাব্য যুদ্ধ প্রাথমিকভাবে একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্তের অংশ। এই চক্রান্ত না বুঝলে পদে পদে সিন্ধান্ত নিতে ভুল হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে এই লড়াইয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে পক্ষ বিপক্ষ একই পরিকল্পনার অংশ, যার উদ্দেশ্য ডিপপুলেশন। যদিও চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে এই পরিকল্পনা পাল্টে যেতে পারে, সেটা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু শুরুতে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে সংঘাতকে এগিয়ে নেয়ার জন্য অসংখ্য উস্কানিমূলক কাজ করা হচ্ছে। আর প্রতিটি চক্রান্তের মাঝে সত্য ও মিথ্যার প্যারাডক্স মিশ্রিত আছে যাতে করে একপক্ষ এটিকে বানোয়াট বা কন্সপাইরেসি থিউরিস্টের চিন্তাভাবনা বলে উড়িয়ে দিতে পারে। কিন্তু সত্য এটাই যে চক্রান্ত আমাদের চারপাশে জালের মতো বোনা আছে।

বাংলাদেশকে নিয়ে পর্দার আড়ালের চক্রান্ত না বুঝলে অথবা বুঝেও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হলে এর চরম মূল্য দিতে হবে। এ সময়ের চক্রান্ত অতীতের আর দশটা চক্রান্তের মতো নয়। এমনভাবে গেইম সাজানো হয়ে থাকতে পারে যে পার্বত্য এলাকার রফাদফা হয়ে গেলে বা সংবিধানের মতো স্পর্শকাতর জায়াগায় বড় পরিবর্তন আনা হলে যারা বিপক্ষে কথা বলবে তারাও মেটিকুলাস পরিকল্পনার অংশ। লোক দেখানো বিরোধীতা, বিবৃতি, বিক্ষোভ করে আল্টিমেটলি চক্রান্তকারীদের লক্ষ্য অর্জনে সাহায্য করবে। এই চক্রকে চিহ্নিত করা খুব কঠিন কাজ নয়। সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস করানো কঠিন। কারণ তারা মানুষের আবেগের জায়গা দখল করে খেলে যাচ্ছে। এটি বিপদজ্জনক খেলা। এদের তালিকা অনেক লম্বা এবং বৈচিত্রপূর্ণ। সুশীল থেকে শুরু করে ইসলামিক সেলিব্রিটি, ছদ্মবেশী প্রতিবাদি বিপ্লবী এরকম অনেকে চলে আসতে পারে তালিকায়। এরা নিরপেক্ষ ও ধর্মের লেবাস ধারন করে আছে। এরা এক কথায় নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এজেন্ট। অল্পকিছু মানুষ যারা নিরেট সত্য উপলব্ধি করবে তারা অসহায়ের মতো চেয়ে চেয়ে দেখবে। জানা নাই সেখান থেকে ফিরে আসার লড়াই কতটা কঠিন হতে পারে। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা যুদ্ধ পরিস্থিতি, পাহাড় দখলের নকশা, সীমান্তে উত্তেজনাসহ সব অস্থিরতা সামাল দিতে আমাদের কোন প্রস্তুতি নাই। সামনে আরো বড় বড় চক্রান্ত অপেক্ষা করছে। পদক্ষেপ নেয়া তো দূরের কথা, চক্রান্ত বোঝায় দায় হয়ে গেছে!

প্রযুক্তি থেকে দূরে থাকুন

আমি প্রযুক্তি বিমুখ না। বরং প্রযুক্তির খুঁটিনাটি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থেকে বলতে পারি যে সামনের দিনগুলোতে প্রযুক্তি থেকে যথাসম্ভব নিজেকে যত দূরে রাখা যায় জীবন তত নিরাপদ থাকবে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়া। অথবা প্রযুক্তিকে এমনভাবে ব্যবহার করা যাতে পরিকল্পনাকারীদের উদ্দেশ্য সফল না হয় বরং উল্টা তাদের উদ্দেশ্যের উপর ছুরি চালানো যায়। যদিও এর জন্য যত কৌশল রপ্ত করা দরকার সেটা সহজ নয়। তাদের পরিকল্পনা কি? এক কথায় আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করা। সোশ্যাল মিডিয়া দিয়ে একজন মানুষের চিন্তা চেতনা থেকে শুরু করে একটা জাতীয় আন্দোলনকেও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাই উত্তম হলো এই প্রযুক্তির খেলা থেকে সম্পূর্ণ দূরে সরে না গিয়ে বরং কাজগুলোকে তারা কিভাবে ম্যানিপুলেট করে তা সম্পর্কে আরো খুঁটিনাটি জানার চেষ্টা করা উচিত যেন তাদের উদ্দেশ্যকে নস্যাৎ করে দেয়া যায়। কৌশলী অবস্থান – প্রযুক্তি দিয়ে তাদের মন্দ উদ্দেশ্য থেকে দূরে থাকা আবার সেই প্রযুক্তিকেই তাদের পরিকল্পনার বিপরীতে ব্যবহার করা। কইয়ের তেলে কই ভাজা। ধরি মাছ না ছুঁই পানি।

ধ্যান, দাওয়াত এবং জিহাদ

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) একই সাথে দাওয়াতের কাজ করেছেন, ধ্যান করেছেন এবং জিহাদ করেছেন। আমাদের চরিত্রকে প্রিয় নবীর অনুসরণ করে তৈরি করতে হলে এই বৈশিষ্টগুলোর সমন্ময় দরকার। যদি সেটার প্রয়োজন না থাকতো তবে ওনার মাধ্যমে আল্লাহ এরকম উদাহরণ তৈরি করতেন যে ঠিক আছে নবী মুহাম্মদ সা. জিহাদ করবেন, ধ্যান করবেন কোন সাহাবি, আবার আরেকজন দাওয়াতের কাজ করবেন। কিন্তু সেটি না হয়ে একজনের চরিত্রের ভিতরেই এই সব বৈশিষ্টগুলো দিয়ে আল্লাহ আমাদেরকে এটাই শিক্ষা দিয়েছেন যে একজন আদর্শ মুমিনের ভিতর এই সব বৈশিষ্টের সমন্ময় থাকবে। রণাঙ্গণে যেমন লৌহমানব হবে, দাওয়াতের ক্ষেত্রে তেমনি নমনীয়, ধ্যানের কাজে তেমনি নিমগ্ন।

আমরা ধ্যান, দাওয়াত এবং জিহাদের নামে যে শ্রেণী বিভক্তি করেছি সেটা নবীজির আদর্শের বাহিরে। এই শ্রেণী বিভক্তি ভাঙ্গা উচিত। এর ফলে সুফি, তাবলীগ দাওয়াতি বা জিহাদি দলসহ ৭৩ দলে বিভক্ত উম্মত এক হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এই ভাঙ্গার কাজটি অনেক জটিল, তাই বরং তরুণদের নিজেকে এমনভাবে তৈরি করা উচিত যেন ঐ সবগুলো বৈশিষ্ট একজনের মধ্যেই থাকে। এই তৈরি হওয়া একজন একজন করেই বিশাল একটি দল হয়ে যাবে। সত্যিকার অর্থে নবীর আদর্শকে লালন করা দল। এরকম কোন দলকেই আল্লাহ টিকিয়ে রাখবেন এবং বিজয় দান করবেন ইন শা আল্লাহ।

প্রশ্ন হলো কখন কোন কাজটি করতে হবে? শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত যদি কাউকে দাওয়াতের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা যায় তবে সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখা উচিত। জিহাদের ক্ষেত্রে মুসলিম ইতিহাসের শিক্ষা এটাই যে তারা শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত সবর করবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া না হয় ততক্ষণ অপেক্ষা করবে। এমনকি নির্যাতন চরম মাত্রায় পৌছালেও তা সহ্য করবে যতক্ষণনা একজন লিডারের অধীনে প্রস্তুত হওয়া না যায়। অনেকে এটির বিপরীত ধারনা পোষণ করেন। কিন্তু ইসলাম বাস্তবতা বহির্ভূত চিন্তাকে সমর্থন করেনা। আবার অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা নত হয়ে থাকাও সমর্থন করে না। এক্ষেত্রে নবী মুহাম্মদ সা. এর জীবনের আদর্শ দিয়ে যে শিক্ষা দিয়েছেন সেটাই বাস্তবায়ন করতে হবে। মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করা মানুষদের উপর যখন চরম নির্যাতন নেমে আসল তখনই তিনি যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারতেন। আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে পারতেন। কিন্তু সেটি না করে মদিনায় চলে গেলেন। নিজেদের প্রস্তুত করলেন, দাওয়াতের কাজ অব্যাহত থাকল। তখনও মক্কায় থাকা অনুসারীদের উপর জুলুম নির্যাতন চলছিল। এসময় বারবার যুদ্ধ ঘোষণা দেয়ার অনুরোধ আসলেও নবী মোহাম্মদ সা. তা এরিয়ে গিয়েছেন। এক পর্যায়ে আল্লাহর হুকুম আসলো যুদ্ধের জন্য। বদর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হলেন যে যুদ্ধে মুসলমান বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ছিলো মাত্র ৩১৩ জন। যুদ্ধের মধ্যেও বার্তা দিলেন “আপনারা কোন মহিলাকে আঘাত করবেন না, কোন শিশুকেও না, কোন বৃদ্ধকেও না। সাধারণ জনগণকে কেউ আঘাত করবেন না, কোন কৃষককে আঘাত করবেন না যারা মাঠে কাজ করে, শুধু তাদেরকেই আঘাত করবেন যারা আপনাকে আঘাত করতে আসে, যারা আপনার অধিকার হরণ করেছে এবং আপনার সম্পদ দখল করে ধনি হয়েছে”। বদর যুদ্ধে বিজয়ের পর আবারো দাওয়াতী কাজে মনোনিবেশ করলেন, মদিনা ছাড়িয়ে রোম, পারস্যসহ সারা দুনিয়ায় ইসলামের দাওয়াত পৌছে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করলেন এবং একইসাথে পরবর্তী যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিলেন। এই প্রতিটি ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এই মূহুর্তের সিন্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।

ইতিহাস থেকে আরো একটি বড় শিক্ষা হলো মুসলমানরা অতিতেও কখনো অস্ত্র গোলাবারুদে শীর্ষে ছিল না এখনও নাই। তারা বিজয়ী হয়েছে ইমান ও স্পিরিচুয়াল শক্তির জোড়ে। কিন্তু পার্থক্য হলো মুসলিম স্বর্ণযুগের সেই স্পিরিচুয়াল শক্তির লেস মাত্র এখন আমাদের নাই। ফিতনা, বিভ্রান্তিতে ডুবে থাকা উম্মত, না আছে স্পিরিচুয়াল শক্তি না আছে অস্ত্রসস্ত্র। এই অবস্থায় যদি কেউ বলে আপনারা ঝাপিয়ে পরেন! তারমানে বুঝতে হবে এই ইন্ধনের পিছনে শয়তান জড়িত। তার রক্ত পিপাসা পেয়েছে। একজন মুসলিম লিডার বলবেন এ কথা। কিন্তু চারপাশে চোখকান খুলে দেখুন কারা আমাদেরকে ঝাপিয়ে পরার উস্কানি দিচ্ছে। তারা কি আসলে এই উম্মতের মঙ্গল চায়? যদি চাইতো তবে যুদ্ধের উস্কানি দেয়ার আগে পদ্ধতিগত উপায়ের দিকে তাগিদ দিতো। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য রাশিয়াসহ কিছু দেশ ইতিমধ্যে তাদের নাগরিকদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে, পাঠ্যবইয়ে সামরিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, বিভিন্ন দেশ খাদ্য মজুদ করে রাখছে, নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কার তৈরি করা হচ্ছে। এসব পদ্ধতিগত পদক্ষেপে না গিয়ে যারা উস্কানি দেয় তাদের উদ্দেশ্য হটকারিতা ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। হটকারি সিন্ধান্ত মানেই ডিপপুলেশন এজেন্ডাকে সহজে বাস্তবায়ন হতে দেয়া। এবং যারা উস্কানি দিচ্ছে তারা এই ইকুয়েশনটি খুব ভালো করে জানে।

আমাদের পদক্ষেপ কি হতে পারে তার জন্য আমাদের অবস্থান এই মূহুর্তে ঠিক কোথায় তা পর্যালোচনা করা দরকার। নবী মুহাম্মদ সা. যে ধরনের সিন্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন, আমাদের অবস্থান যাচায় শেষে একই ধরনের মৌলিক সিন্ধান্ত এখন নেয়া যেতে পারে। নিচে আমাদের সম্ভাব্য অবস্থান তুলে ধরার চেষ্টা করব:

চেঙ্গিস খানের আক্রমণে মুসলমানরা ভয়াবহ হত্যা নির্যাতনের শিকার হয়। মুসলিম খেলাফত ধ্বংসের পর অসংখ্যবার নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু এই সবকিছুর থেকে আলাদা মনে করি ১৯৯০ সাল থেকে শুরু হওয়া মুসলিম নিধন যাত্রাকে। যে যাত্রা আজও চলমান। এর কারণ হলো ১৯৯০ থেকে যে ঘোষণা দিয়ে উপসাগরীয় যুদ্ধের মাধ্যমে ইরাক থেকে মুসলিম নির্যাতন শুরু হয় সেই ঘোষণার নাম ছিল “নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার”। আরো গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এর সাথে চলমান মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যুদ্ধ পরিস্থিতি ও থার্ড টেম্পল নির্মাণের হিসাব নিকাশ আছে। ৯০ থেকে ধ্বংসপ্রাপ্ত মুসলিম দেশগুলোর একটা লিস্ট করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। সেসব দেশকে আক্রান্ত করার কৌশল সম্পর্কেও একটা সাধারণ ধারনা নেয়ার চেষ্টা করলে দেখবেন একই ধরনের কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে, একই ধরনের বিপ্লব হয়েছে। বিপ্লব পরবর্তী প্রশিক্ষিত পাপেট সরকার বসানো হয়েছে। একই ধরনের আন্দোলন অর্থাৎ বিগত সরকারের দুর্নীতি, স্বৈরাচারী, যুলুম নির্যাতন ইত্যাদির বিরুদ্ধে পাবলিক সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে বিপ্লব। কখনও সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে আক্রমণ, কখনও মরণাস্ত্র আছে জন্য আক্রমণ ও বিপ্লব, কখনও গণতন্ত্র রক্ষার নামে আক্রমণ, লাল বিপ্লব, জেসমিন বিপ্লব, স্বৈরাচার হটাও বিপ্লব, বসন্ত বিপ্লব ইত্যাদি। একটাও হিন্দু, বৈদ্ধ বা খ্রীষ্টান রাষ্ট্রে এমন বিপ্লবের প্রয়োজন পরেনি!

যাহোক ১৯৯০ সাল থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত চলমান এই প্রকল্প প্রায় শেষের দিকে বলে মনে করি। এই ডেডলাইন নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডারের ডেডলাইনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। একাধিক রেফারেন্স অনুযায়ী ২০৩০ সালকে তাদের হাজার বছরের স্বপ্নের নতুন বিশ্ব গড়ার প্রকল্পের ডেডলাইন হিসেবে মনে করা হয়। এর কিছু আগে পরে তারা লক্ষ্যে পৌছাতে চায়। এছাড়া ধর্ম গ্রন্থ, থার্ড টেম্পলের নির্মাণ অগ্রগতি, গ্রেটার ইসরায়েল প্রকল্প, গ্রেট রিসেট প্রকল্প, এজেন্ডা ২০৩০ সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বিভিন্ন প্রকল্পের সম্ভাব্য ডেডলাইন পর্যালোচনার মাধ্যমেও একইরকম আলামত পাওয়া যায়। মুসলমান নির্যাতন শেষ হওয়ার পর্বও এই ডেডলাইনের সাথে সম্পর্কিত হতে পারে। কারণ হিসেবে বেশ কিছু পয়েন্ট আগের একটি লেখায় তুলে ধরি। আসলে তাদের পরিকল্পনা তাদের কাছে। আল্লাহর পরিকল্পনা নিশ্চয় উত্তম।

সংশ্লিষ্ট সবকিছু পর্যালোচনা করে বলা যায়, মুসলমানরা তাদের উপর চলা নির্যাতন পর্বের একদম শেষ মূহুর্তে এবং ঘুড়ে দাড়ানোর আগ মূহুর্তের ঠিক ট্রানজিশনাল পয়েন্টে দারিয়ে আছে। এখন শত্রুরা নির্যাতনের মাত্রা তীব্র থেকে তীব্রতর করবে। অপরদিকে মুসলমানরা খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঘুরে দাড়ানো শুরু করবে। এ সময় নির্ভুলভাবে শত্রু মিত্র নির্বাচন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসের রেফারেন্স অনুযায়ী ভারত উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় যুদ্ধে এক পক্ষ পালিয়ে যাবে। আরেকটি পক্ষ পরাজিত হবে। চূড়ান্ত পর্বে গিয়ে ধ্বংসস্তুপ থেকে এক পক্ষ ঘুরে দাড়াবে, তারা আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্ত হবে এবং বিজয়ী হবে। তারাই বায়তুল মাকদিস পর্যন্ত বিজয়ের পতাকা উড়াবে।

প্রতিটি ধাপে নবী মুহাম্মদ সা. বিশেষ করে যেভাবে বদর যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়েছেন সেখান থেকে শিক্ষা নিয়ে মৌলিক সিন্ধান্তগুলো গ্রহণ করা উচিত। ভারত উপমহাদেশের ভয়ংকর যুদ্ধকে তো সে সময়ের বদর যুদ্ধের সাথেই তুলনা করা হয়েছে।

নিজেকে আড়ালে রাখুন

সম্ভাব্য আসন্ন অরাজক পরিস্থিতিতে সেলিব্রিটিরা খুব সহজেই টার্গেটে পরিণত হতে পারে। তাই নিজেদের যথাসম্ভব আড়াল করে রাখুন, নিরবে কাজ করে যান। মক্কার যুবকরা রাতজেগে গোপনে ইসলাম চর্চা করতেন। অথবা আসহাবে কাহফের যুবকদের কথা চিন্তা করুন যারা নিজেদের পরিচয় আড়ালে রেখে রোম সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। সেই সময়কে কল্পনা করুন এবং এখন একইভাবে নিজেদের প্রস্তুত করুন। সত্যের পথে কেউ লড়ায়ের প্রস্তুতি শুরু করলে শকুনরা ঝাঁপিয়ে পড়বে সেটাই স্বাভাবিক। আর যদি দেখে কিছু প্রতিভা আছে আবার ভেজালও আছে তবে এই সভ্যতা তাকে সেলিব্রিটি বানিয়ে দিবে। তাছাড়া প্রকৃত সত্যের সৈনিকদেরকে ডার্ক ফোর্সের সম্মিলিত বাহিনীর মুখোমুখি হতে হবে। এদের মোকাবিলা করার কৌশল রপ্ত করা প্রস্তুতি পর্বের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই প্রস্তুতি পর্ব নিরবে সেরে ফেলুন। কোন সংগঠনের ব্যানারে অংশগ্রহণ জরুরী নয়। বরং তাতে ঝুকি বেশি। কে কোন দলের সেটাও মুখ্য নয়। লক্ষ্য যাদের সাথে মিলবে তার সাথে হাত মিলবে। না হলে একলা চলে রে! আবার উল্লেখ করছি মজলুমরা নির্যাতিত হওয়ার শেষ মূহুর্ত এবং ঘুরে দাড়ানোর আগ মূহুর্তের ঠিক ট্রানজিশনাল পয়েন্টে দাড়িয়ে আছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব নিরবে প্রস্তুতি শুরু করে দিন।

স্পিরিচুয়াল শক্তি

এটি এমন এক ধরনের অভ্যন্তরীণ শক্তি যা কোনো ব্যক্তির আত্মিক উন্নয়ন, মানসিক স্থিরতা, ধর্ম, সাধনা, ধ্যান, আধ্যাত্মিক উপলব্ধি এবং আত্ম-অনুসন্ধানের মাধ্যমে অর্জিত হয়। ডার্ক ফোর্স কারো চেতনায় যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ইসলামের স্পিরিচুয়াল শক্তির মাধ্যমে তার বিপরীত ইতিবাচক প্রভাব ফেলা যায় এবং নেতিবাচক শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া যায়। এটি এমন এক ধরনের প্রজ্ঞা এবং অন্তর্দৃষ্টি তৈরি করতে পারে যা জগৎ ও জীবনের গভীরতর অর্থ অনুধাবনের ক্ষমতা রাখে। দাজ্জালের ফিতনা ও চারপাশে জালের মতো ছড়িয়ে থাকা চক্রান্ত চিহ্নিত করতে এই উপলব্ধিবোধকে জাগ্রত করা অত্যন্ত জরুরী। এজন্য ইয়োগার ফাঁদে পরবেন না আবার। এ বিষয়ে আলেম বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন। এখানে আমার নিজস্ব কিছু উপলব্ধি শুধু শেয়ার করবো।

কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে আদেশ নিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালনের মাধ্যমে এই শক্তি অর্জন করা সম্ভব। প্রয়োজনে হিজরত করতে হবে। হিজরত মানে শুধু এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া নয়। হিজরত হলো দ্বীনের প্রয়োজনে কোন কিছু ত্যাগ করা। প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদিনায় চলে যাওয়া নিঃসন্দেহে দ্বীনের জন্য অনেক বড় ত্যাগ ছিল। আমাদের মাতৃভূমি ছেড়ে চলে যাওয়ার দরকার পরেনি এখনও। কিন্তু সত্যের রাস্তায় আসতে হলে হিজরত করতে হবে। মিথ্যা বলা বন্ধ করুন, দেখবেন সমস্ত অন্যায় বন্ধ হয়ে গেছে। সুদের চাকরী ছেড়ে দিন। এটা হিজরত। ঘুষ বা যেকোন অসদুপায়ে চাকরী নিয়ে থাকলে সেই ইনকাম কোনভাবে হালাল হবে না। ঐ চাকরী ছেড়ে দিন। মানুষ ঠকানো ব্যবসা, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ করে ফিরে আসুন। সবার জানা এই বিষয়গুলোই আসলে প্রস্তুতির অনেক বড় অংশ এবং ইমানকে মজবুত করা ও স্পিরিচুয়াল শক্তি অর্জনের হাতিয়ার।

ফরজ আমলের পাশাপাশি আত্নিক শক্তি বৃদ্ধির জন্য জিকির অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য গুহায় যাওয়ার সুযোগ নেই। কোন দরবারে গিয়ে চিৎকার করে জিকির করা নয়। কারো অন্তর চিৎকার করতে পারে কিন্তু পাশের কেউ টের পাবেনা। প্রতিটি স্পন্দনে যখন যেই অবস্থানে, জিকির চলবে। রাত তিনটা, সবাই যখন ঘুমিয়ে তখন ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর খুব কাছাকাছি পৌছে যাওয়ার উত্তম সময়। খাইতে, শুইতে, বাথরুমে যেতে, ঘর থেকে বের হতে, ঘরে প্রবেশের সময়, প্রতিটি মূহুর্তে দোয়ার মাধ্যমে চারপাশে একটি বলয় তৈরি করা যেন ডার্ক ফোর্সের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত থাকা যায় এবং আত্নিক শক্তি বৃদ্ধি করা যায়। এই সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূরা হলো সূরা কাহাফ। দাজ্জালের ফিতনার মহৌষধ এর ভিতর রয়েছে। তা না হলে কেন দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাচতে সূরা কাহাফের উপর এতো জোর দেয়া হলো! সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত প্রতি শ্রক্রবার পড়ুন। প্রতি মূহুর্তে পড়ুন রাব্বানা আতিনা মিল্লাদুনকা রাহমাতাও ওয়া হাইয়্যি লানা মিন আমরিনা রাশাদা। কারণ যেকেউ যেকোন মূহুর্তে দাজ্জালের ফিতনায় পরে ভুল সিন্ধান্তে যেতে পারে, বিভ্রান্তিতে পরে ইমান হারা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

কখন বুঝবেন আপনি এই শক্তি অর্জন করেছেন? সত্যিকার অর্থে কেউ এই তালিকায় নাম লিখালে একের পর এক পরীক্ষা এসে হাজির হবে। একটা পরীক্ষায় পাশ করলে আরেকটা। আর একটার পর একটা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া মানে শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া। কখনও রোগ, বিপদ আপদ, পারিবারিক সমস্যা, আর্থিক সংকট, ভয় ভীতি ইত্যাদি নানা রকম পরীক্ষা এসে হাজির হতে পারে। প্রতিটি পরীক্ষায় পাশ করার মাধ্যমে একটা পর্যায়ে নফসের উপর নিয়ন্ত্রণ চলে আসবে, ধীরে ধীরে প্রস্তুত হয়ে যাবেন, শয়তানও হাল ছেড়ে দিবে ইন শা আল্লাহ। সেই মূহুর্তে আল্লাহর আদেশ নিষেধের এক সুচ পরিমাণ বাহিরে গেলে আপনার অন্তর কেপে উঠবে। একটি সচেতন সত্তা জাগ্রত হবে যা অন্যায় কাজ করতে বাধা দিবে। মাঝে মাঝে হয়ত অনুভব করবেন সেই সচেতন সত্তা বা কোন এক অদৃশ্য শক্তি আপনাকে গাইড করছে। এটিই ইমানের শক্তি বা স্পিরিচুয়াল শক্তি। এই শক্তিকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কোন বিকল্প নাই।

মধ্যমপন্থা অবলম্বন

আক্রমনাত্নক নাকি রক্ষনাত্নক? বাড়াবাড়ি, ছাড়াছাড়ি নাকি মাঝামাঝি? আমরা ইতিহাসের এমন একটা সন্ধিক্ষণে অবস্থান করছি যেখানে প্রতিটি ধাপ সাবধানে ফেলতে হবে। চুল পরিমাণ ভুল করলে শত্রুতা সেই দুর্বলতার সুযোগ নিবে। আর ভুলের মাঝে হাবুডুবু খেয়ে হটকারিতা করে মুক্তির স্বপ্ন দেখলে রক্ত ঝরার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। তাই কোন কিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি নয়, ছাড়াছাড়িও নয়। ইসলামের শিক্ষা হলো প্রতিটি ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা। সেটা রাষ্ট্রীয় সিন্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে হোক অথবা যুদ্ধক্ষেত্রে হোক।

What do you think?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

দাজ্জালের আগমন

দাজ্জালের আগমন, আত্নপ্রকাশ এবং শাসনকাল

নতুন বিশ্ব ও বাংলাদেশ

নতুন বিশ্ব ও বাংলাদেশের পরিকল্পনা এবং পরিণতি