in ,

AgreeAgree LoveLove

নতুন বিশ্ব ও বাংলাদেশের পরিকল্পনা এবং পরিণতি

নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার: ২য় পর্ব

নতুন বিশ্ব ও বাংলাদেশ

নতুন বিশ্ব ধারনাটি এ সময় ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয়। নিজেদের অজান্তেই এই বৈশ্বিক বাস্তবতার মধ্যে বাংলাদেশ ঢুকে গেছে যা দীর্ঘদিনের সুপরিকল্পনা অনুযায়ী এগিয়ে গেলেও গত জুলাই-আগষ্ট ২০২৪ এ এর চূড়ান্ত পর্ব প্রস্তুত করার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ইহুদী জায়োনিস্ট ও পশ্চিমা জোটের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরনের চূড়ান্ত মূহুর্তের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে একটি নতুন বিশ্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। এর পিছনের মূল কারিগর পশ্চিমা জোট হলেও অন্য পরাশক্তিরাও পিছিয়ে নেই। তারাও নিজ নিজ ধর্ম, মতাদর্শ, বাণিজ্যনীতি, ভূরাজনৈতিক দর্শন অনুযায়ী লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যাচ্ছে। আবার কোন কোন দেশ শুধু পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেয়া বোঝা সামলাচ্ছে। পর্দার পিছনে লড়াইটা যে খুব ভালো মতো জমে উঠেছে তা বাহিরে থেকে বুঝার উপায় নেই। শুধু জানতে পারছি একের পর এক যুদ্ধ সংঘাত বেড়েই যাচ্ছে। কিন্তু এসব কিছুর পিছনে চলছে একটি মহা আয়োজন। একটি নতুন বিশ্ব গড়ার মহা আয়োজন। এই আয়োজনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ নিয়ে কিছু লেখার চেষ্টা করব এখানে।

নতুন বিশ্ব

চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, সবুজায়ন, শান্তি-সমৃদ্ধির যে নতুন বিশ্বের গল্প সাধারণ মানুষকে শোনানো হয়েছে তার সাথে বাস্তবতার কোন মিল নেই। এ ধরনের নতুন বিশ্ব গড়তে যুদ্ধের প্রয়োজন নেই। কিন্তু যুদ্ধ সংঘাতের মধ্য দিয়ে বাস্তবিক অর্থে যে নতুন বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু যা প্রচলিত মিডিয়ায় আসেনা। যা আমাদের ভাবনার বাহিরে। সাধারণ আলোচনার বাহিরে কুশিলবরা ভিন্ন একটা পৃথিবী গড়ার স্বপ্নে বিভোর। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে যেভাবে ওয়ার্ল্ড অর্ডার পরিবর্তন হয়েছিল। আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের মাধ্যমে আবারো ওয়ার্ল্ড অর্ডার পরিবর্তনের চেষ্টা করা হচ্ছে যার মধ্য দিয়ে কুশিলবরা নতুন একটি বিশ্ব গড়তে চায়, যাকে বলা হচ্ছে নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার। এর মাধ্যমে গ্লোবালিষ্ট ফ্যামিলি বা বিশ্বের ক্ষমতাধর এলিটরা মিলে একটি কেন্দ্রীয় সরকার বা প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বকে একক শাসন ব্যবস্থার অধীনে আনতে চায়। নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার প্রথম পর্বে প্রাথমিক বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়েছে। এই লেখায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কিছু বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করব।

নতুন বিশ্ব ও বাংলাদেশ

আগের দুটি যুদ্ধের মধ্যে এবারের উল্লেখযোগ্য পার্থক্য হলো ভারত উপমহাদেশ সরাসরি বেটল গ্রাউন্ড হতে যাচ্ছে এবং স্বাভাবিকভাবে এখানে বাংলাদেশ চলে আসে। কাজেই বাংলাদেশে যা কিছু হচ্ছে তা বিশ্ব পট পরিবর্তনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এটা এখন সুস্পষ্ট যে বাংলাদেশকে নতুন বিশ্ব গঠনে এশিয়ায় যে গেম প্লান করা আছে সে অনুযায়ী সুপরিকল্পিতভাবে চূড়ান্ত মূহুর্তের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। ২০২৪ এর আন্দোলনকে নানা ডাইমেনশনে দেখা যায়। বামপন্থি, ইসলামপন্থি, সুশীল, সুবিধাবাদী, আওয়ামী ও আওয়ামী বিরোধী রাজনীতিবিদ থেকে সাধারণ জনগণ প্রত্যেকে ভিন্ন ভিন্ন ডাইমেনশনে ব্যাখ্যা দিতে পারে। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে একটি মাত্র বিষয়কে আকড়ে ধরে আছি সেই শুরু থেকে। পলাশীর যুদ্ধ থেকে ৪৭, ৬৯, ৭১, ৯০ সহ অতীতের বহু আন্দোলন থেকে ২৪ ভিন্ন কিছু। এটি ডার্ক ফোর্স এ্যাটাক। এই ভূখন্ড ডার্ক ফোর্সের সুপরিকল্পিত আক্রমনের শিকার হয় যা সম্পর্কে ইতিমধ্যে আলোচনা করেছি। এখন পর্যন্ত এই সিন্ধান্ত পরিবর্তনের কোন প্রয়োজন পরেনি। বরং কিছু ধোঁয়াশা আরো স্পষ্ট হয়ে গেছে। ভূরাজনীতির সাথে স্পিরিচুয়াল ইন্টারপ্রিটেশনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এর পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব। এর বাহিরে যত ব্যাখ্যা দেয়া হোক না কেনো তা অসম্পূর্ণ থাকবে এবং ফলস্বরূপ সিন্ধান্ত ভুল হবে।

কিন্তু বাস্তবতা হলো আমাদের এসব নিয়ে ভাবার মতো সময় নেই। অধিকাংশ মানুষ ডার্ক ফোর্স সম্পর্কে ধারনা রাখে না। বাংলাদেশতো বটেই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার সম্পর্কেও সচেতন না। অথচ সারাদুনিয়াকে থার্ড টেম্পল, নতুন বিশ্ব, এক ধর্ম, এক মুদ্রা, ইনক্লুসিভ সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই সবকিছু একসূত্রে গাঁথা। এই সবকিছু দাজ্জালের শাসনব্যবস্থাকে চূড়ান্তভাবে প্রতিষ্ঠা করার পাঁয়তারা। নতুন বিশ্ব হলো পশ্চিমাদের দৃষ্টিতে দাজ্জালের বিশ্ব যেটি এখন আর কোন গোপন বিষয় নয়। বরং তারা নিজেরাও ফলাও করে প্রচার করে। পশ্চিমা বলয়ের বাহিরে আপাত মনে হতে পারে যে সব পরাশক্তি বোধহয় একই মরীচিকার পিছনে ছুটছে অথবা কোন একক শক্তি সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি পুরোপুরি সত্য নয়। সবাই নিজ নিজ আধিপত্য স্থাপনের চেষ্টা করছে ভিন্ন ভিন্ন দর্শন থেকে। পশ্চিমা ছাড়া বাকি পরাশক্তিদের কাছে এই নতুন বিশ্বে আধিপত্য স্থাপনের দর্শন ভিন্ন। রাশিয়ার কাছে এটি নতুন অর্থোডক্স বলয়ের বিশ্ব যেটি নিউ রোম বা থার্ড রোম হিসেবে উল্লেখ পাওয়া যায় থিওলজিক্যাল অনেক বিশ্লেষণে। চীনের কাছে এটি বাণিজ্যিক মোড়ল হওয়ার নতুন বিশ্ব। ইরান স্বপ্নে বিভোর মধ্যপ্রাচ্যের মোড়ল হওয়ার জন্য। ভারতকে অখন্ড ভারত গঠনের স্বপ্ন দেখানো হয়েছে। আর এই জটিল গোলকধাঁধা ও ভূরাজনীতির জাঁতাকলে বাংলাদেশ ঢুকে গেছে যা নিয়ে সাধারণ মানুষ, বিশ্লেষক ও মূল ধারার মিডিয়ায় কোন আলোচনাই নাই। জুলাই আন্দোলন সমর্থকদেরকে এই বাস্তবতায় মোটাদাগে দুটিভাগে বিভক্ত করা যায়।

এর মধ্যে এক পক্ষ জেনেবুঝে ছদ্দবেশ ধারন করে এবং অত্যন্ত সুক্ষভাবে পশ্চিমা নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এজেন্ডাকে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এখনও তাই করছে।

দ্বিতীয় পক্ষ বিগত সরকারের দুর্নীতি, জুলুম নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকে নিরপেক্ষ বিবেচনায় প্রতিবাদি হয়ে ওঠে। আবার কেউ কট্টর অ্যান্টিআওয়ামী সেন্টিমেন্টের কারণে মাঠে নেমেছিল। কেউ ছদ্দবেশি প্রথম পক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। নিঃসন্দেহে এই পক্ষের আপাত উদ্দেশ্য ভালো ছিল। আবেগ ছিল, দেশপ্রেম ছিল। আর সবচেয়ে বড় একটি শ্রেণী যারা কিনা ধর্মীয় চেতনা থেকে মাঠে নেমেছিল। কিন্তু মাত্র এক বছরেই আবেগ, অনুভুতি, দেশত্ববোধ সবকিছু মলিন হয়ে গেছে আড়ালের চক্রান্তের কাছে। সামনের দিনে এই শ্রেণীর ভুক্তভোগী হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশি কারণ সাধারণ মুমিন মুসলমানরাই এনডব্লিউও ডিপপুলেশন এজেন্ডার মূল টার্গেট।

ছদ্মবেশি এজেন্টদের ফিরে আসার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে দ্বিতীয় পক্ষের কিছু মানুষ ফিরে আসবে। বাকিরা মনস্তাত্ত্বিক দ্বন্দ্বে পরাজিত হয়ে দাজ্জালিক এজেন্ডার অংশ হয়ে যাবে। তবে এতোটুকু উপলব্ধি হয়ত হবে যে এটি কোনভাবেই আওয়ামী বিএনপি ইস্যু ছিল না। এটা গ্লোবাল এজেন্ডার অংশ। নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এজেন্ডার অংশ।

এবার অন্তবর্তীকালীন সরকারের এ পর্যন্ত নেয়া কিছু পদক্ষেপ এক নজরে দেখা যাক-

➥ মানবিক করিডোর বা ত্রাণ চ্যানেলের অনুমোদন।
➥ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল মার্কিন নৌবাহিনীর কৌশলগত মিত্র ডিপি ওয়ার্ল্ডের কাছে হস্তান্তর।
➥ ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের অফিসিয়াল কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন।
➥ ইলন মাস্কের স্টারলিংক ইন্টারনেট কার্যক্রম চালু। যাদের ইন্টারনেট সেবা প্রদানের নামে ভূরাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন ইতিমধ্যে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
➥ নারী অধিকার কমিশন চালু।
➥ পতিতাবৃত্তিকে পেশাগত স্বীকৃতি।
➥ শব্দের ম্যারপ্যাচে বহুত্ববাদকে সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে এলজিবিটিকিউ ও সকল ধর্মকে একত্রিত করে ধর্মীয় পট পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ যা এখনও বাস্তবায়ন হওয়ার পথে।

মোট কথা রাজনৈতিক, ধর্মীয়, সামাজিক ও ভূরাজনৈতিক পুনর্গঠননীতির অংশ হিসেবে উপরের পদক্ষেপগুলো নেয়া যা সরাসরি পশ্চিমাদের কল্পিত নতুন বিশ্বের ধারাবাহিক প্রস্তুতির সাথে সমন্বয় রেখে করা হয়। এবার আন্দোলন শুরুর আগে, আন্দোলন চলাকালীন এবং আন্দোলন পরবর্তী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।

নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষ

নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষ (Controlled Opposition) বলতে সাধারণত এমন কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে বোঝায় যারা বাহ্যিকভাবে একটি আন্দোলন, মতাদর্শ বা বিরোধী দলের অংশ মনে হলেও, আসলে সেই গোষ্ঠী বা ব্যক্তি আন্দোলনের মূল প্রতিপক্ষের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত হয়। নতুন বিশ্ব গড়তে বিশেষ করে মুসলিম যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ব্যাপকভাবে এই কৌশলের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এটি সম্পর্কে জানার পর বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে চিন্তা করলে এখানেও এই কৌশলের লক্ষ্যণীয় প্রয়োগ দেখা যাবে।

বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই কৌশলের ব্যবহার হতে পারে, যেমন:

রাজনৈতিক অঙ্গনে

যখন একটি সরকার বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে এমন একটি বিরোধী দল সৃষ্টি বা সহ্য করে, যেটি আসলে তেমন কার্যকর নয় বা জনগণের প্রকৃত প্রতিনিধিত্ব করে না, তখন তাকে “নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষ” বলা হয়। এটি একটি ভুয়া বা কৃত্রিম বিরোধী শক্তি, যার উদ্দেশ্য জনগণের ক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। যদি কোনো দল বিরোধী পক্ষের ভেতরে নিজের লোক বসিয়ে দেয় যাতে আন্দোলনটি দুর্বল হয়, বিভ্রান্ত হয় বা সরকারকে প্রকৃত হুমকি না দিতে পারে, তাহলে সেই বিরোধী দলটি নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষ।

যুদ্ধ কৌশলে

সামরিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কৃত্রিম বা নিয়ন্ত্রিত শত্রু যার মাধ্যমে বাস্তব যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয় অথবা যুদ্ধ যুদ্ধ নাটক পরিচালনার মধ্য দিয়ে প্রকৃত প্রতিপক্ষ তাদের লক্ষ্য অর্জন করে। খণিজ সম্পদের দখল, ভূমি দখল, সাধারন মানুষ হত্যা বা সামরিক লক্ষ্য অর্জনে এই কৌশলের প্রয়োগ হয়ে থাকে।

সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে

বড় কোন সামাজিক লক্ষ্য অর্জনে কনট্রলড অপোজিশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ সমকামিতার মতো সামাজিক ও ধর্মীয় সংবেদনশীল কোন বিষয়কে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে সেই সমাজেরই এমন একটি প্রতিনিধি দল তৈরি করা হয় যারা প্রকাশ্যে স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে বিরোধীতা করলেও প্রকৃতপক্ষ্যে সেটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে কনট্রলড অপোজিশন তৈরির গুরুত্ব ব্যাপক। তারা সমাজের দুর্বলতাগুলোকে চিহ্নিত করে। প্রকৃত প্রতিপক্ষ চিহ্নিত করতে কাজ করে। এমনভাবে সমাজে মিসে যায় যেন ঐ ইস্যুর একজন বলিষ্ঠ প্রতিবাদী।

সাধারণ লক্ষণ

• প্রতিপক্ষ হয়েও ইস্যু বুঝে দুর্বল প্রতিবাদ করে।
• স্বার্থের অনুকুলে আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করে।
• গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু এড়িয়ে চলে বা মনোযোগ ঘুরিয়ে দেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে নিরব থাকে।
• অকার্যকর ক্ষোভ, প্রতিক্রিয়া জানানো, লিখিত বিবৃতি দেয়া।
• মূল শক্তিকে চ্যালেঞ্জ না করে শুধু নাটকীয় বিরোধিতা করে, লোক দেখানো প্রতিবাদ করে। এমন কৌশলী প্রতিবাদ যার ফলাফল শূণ্য।

কেন এই কৌশল?

• বড় কোন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সময় পক্ষ ও বিপক্ষ উভয়কে নিয়ন্ত্রণে রাখা।
• জনমত নিয়ন্ত্রণে রাখা।
• প্রকৃত বিরোধী শক্তি যাতে গড়ে না ওঠে।
• সত্যিকার প্রতিবাদিদের চিহ্নিত ও দুর্বল করা।
• প্রতিবাদ চলমান আছে এই ভাবটা বজায় রেখে বাস্তবে পরিবর্তন না আনার জন্য।
• ইন্টেলিজেন্স ফোর্স হিসেবে কাজ করা, গোয়েন্দা তথ্য বের করে আনা।
• প্রকৃত বিরোধী পক্ষকে লক্ষ্যের অনুকূলে আনা।

বলা যায় নিয়ন্ত্রিত প্রতিপক্ষ (Controlled Opposition) ধারনাটি সাধারণ গয়েন্দাগিরির থেকে অনেক বেশি কিছু। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে এ ধরনের কনট্রলড অপোজিশন অত্যন্ত কৌশলে কাজ করে যা সাধারণ মানুষের ধারণার বাহিরে। দীর্ঘদিনের বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এ ধরনের গ্রুপ তৈরি করা হয়। এরপর তারা সাধারণ মানুষের পক্ষ নিয়ে তাদের ভিতরে ঢুকে যায় এবং মানুষের মন জয় করে। পরবর্তীতে এদেরই সহায়তায় অপর সহযোগী গ্রুপ সুবিধা আদায় করে ও লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে। যদিও সব দেশে সবকিছুকে একই ফ্রেমে চিন্তা করা ঠিক না। কোথায় এই কৌশল বাস্তবায়ন হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে জানা সম্ভব।

সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক ও পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সহিংসতাকে দীর্ঘদিন ধরে সুপরিকল্পিতভাবে তৈরি করা ভিন্ন ভিন্ন গ্রুপ দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই গ্রুপগুলোই কনট্রলড অপোজিশন। এদেরকে দিয়ে যেসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে তা সুস্পষ্টভাবে পশ্চিমাদের কথিত নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার এজেন্ডার সাথে সমন্বয় রেখে করা হচ্ছে। এদেরকে চিহ্নিত করা কঠিন তবে অসম্ভব না। ছদ্মবেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষকে বুঝানো বরং অনেক কঠিন। এই তালিকা কতো লম্বা হতে পারে তা আমাদের ধারণার বাহিরে। শুধু আবেগ নয় বাস্তব দৃষ্টিকোণ থেকে খুজে দেখলে পাওয়া যাবে যে, গত আন্দোলনে অংশ নেয়া শীর্ষ পর্যায়ের কুশিলবদের অধিকাংশ এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত। এনজিও, সুশীল সমাজ, ইসলামিক সেলিব্রিটি, মিডিয়া, কর্পোরেশন, রাজনৈতিক নেতা, ইউটিউবার, ফেসবুক সেলিব্রিটি; কে নেই এই তালিকায়। এখানে শুধু সাধারণ মানুষের আবেগ সত্য ছিল। বাকি শীর্ষ নেতৃত্বের অধিকাংশই ছিল বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গ্রুপ। গ্রুপগুলো ভিন্ন ভিন্ন সেক্টরের হলেও একত্রে একটিমাত্র সিন্ডিকেটের অংশ হিসেবে কাজ করে যাকে এনডব্লিউও (নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার) সিন্ডিকেট বলা যায়।

কনট্রলড অপোজিশন যেহেতু ছদ্মবেশী, কাজেই অনেক ভালো ভালো কথা বলে, কিছু কাজও করে। এসব ভালো কথার ফাকে ফাকে এনডব্লিউও এজেন্ডা পুশ করা হচ্ছে। অত্যন্ত সতর্কতার সাথে সাধারণ মানুষের পালস বুঝে কাজগুলো করা হচ্ছে। আমাদের উচিত কনট্রলড অপোজিশন সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং দ্রুত তাদের ছদ্মবেশ চিহ্নিত করা। তাদের ভালো কথা ও কাজ গ্রহণ করা। চক্রান্ত সম্পর্কে সচেতন হওয়া।

শেখ হাসিনা ফিরে আসবে

১৬ বছরের সরকার হঠাৎ ভেঙ্গে পড়েছে এটা ভুল কথা। সাধারণ জনগণ শেখ হাসিনাকে তাড়াতে পেরেছে, চাইলে এই সরকারকেও তাড়িয়ে দিবে। জুলাই হাতছাড়া হয়ে গেছে। জুলাই ব্যর্থ হয়েছে। ড. ইউনুস এতো বড় সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। ভারতের গোলামি থেকে মুক্ত হয়ে আমেরিকার গোলামি শুরু হয়েছে। এই সমস্ত কিছু ভুল কথা। আমরা সরল বিশ্বাসে নানা সমীকরণ করে তা নিয়ে তর্কে লিপ্ত হই, মারামারি করি। জানিনা ‍বুদ্ধিমান শয়তানরা এসব দেখে হাসে কিনা। আসলে সাধারণ মানুষকে সম্মুখে রেখে তাদের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয়েছেমাত্র। সারা বিশ্বের শাসন ব্যবস্থার যে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে তার একটা বড় ঢেউ এসে ধাক্কা দিয়েছে। এই ধাক্কাটা ডার্ক ফোর্সের। এই নতুন শাসন ব্যবস্থাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাদের এখনও অনেক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা বাকি আছে। শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা তাদের পরিকল্পনার আরো একটি অংশ। যে কুশিলবরা তাড়িয়েছিল তারাই ফিরিয়ে আনবে। এটা খেলার অংশ। খুবই বিপদজনক খেলা। কুশিলবদের পরিকল্পনা দুর্বল হয়ে যাবে যদি আওয়ামী লীগ ভুল সংশোধন করে দূরদর্শীতার সাথে খেলায় অংশ নিতে পারে।

দেশের এমনই ঘোলা জলের মধ্যেই বৈশ্বিক ঢেউ এসে লাগার সম্ভাবনা বহুগুণ। এর মধ্যে কাশ্মির ও পাকিস্তান সব থেকে ঝুকিপূর্ণ অবস্থানে যার ব্যাখ্যা আগের লেখাগুলোতে আছে। এছাড়া মায়ানমার, সেভেন সিস্টার্সসহ আমাদের পার্বত্য এলাকা ও সীমান্ত এলাকাগুলো ঝুকির মধ্যে আছে। এসব জায়গায় বড় কোন ঘটনা মূহুর্তের মধ্যে দেশের হিসাব নিকাশ পাল্টে দিতে পারে। বড় কোন পরিকল্পনা থাকলে সেটি মাথায় রেখেই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কারণ এই ডিজাইনের ইঞ্জিনিয়ার তারাই। উদাহরণস্বরূপ এমন কোন ঘটনা যদি সেপ্টেম্বর ২০২৫ অথবা আগামী ৬ মাসের মধ্যে ঘটানোর পরিকল্পনা থেকে থাকে তবে এই সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের একটা ঘোষণা দিয়ে দিতে অসুবিধা কোথায়! পার্বত্য এলাকা, সীমান্ত এলাকা অথবা প্রতিবেশি রাষ্ট্রে বড় কোন ঘটনা ঘটলে দেশে জাতীয় নির্বাচনের কোন পরিস্থিতি থাকবে না।

সুনির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে ১৬ বছরের আওয়ামী রেজিম পরিবর্তন করা হয়েছে। উপরে উল্লেখিত বেশকিছু ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে। বাকিগুলো হওয়ার পথে। বিগত সরকারকে দিয়ে এতকিছু বাস্তবায়ন সম্ভব ছিল না। আওয়ামী লীগ সরকারকে দিয়ে যতটুকু করানো সম্ভব তা করা হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত প্রস্তুতির জন্য রেজিম পরিবর্তন বাধ্যতামূলক ছিল। কারণ আগের সরকারকে অন্য পরাশক্তির সাথে ভারসাম্য বজায় রাখতে হতো যে ব্যাপারটি এখন নেই।

এগুলো মহাপরিকল্পনার অংশ। কাজেই একটি দুটি এজেন্ডা বাস্তবায়ন হয়েই থেমে যাবে এমন না। তাদের স্বার্থ হাসিলের পাশাপাশি দেশকে দুটি বৃহৎ শক্তিতে বিভক্ত করা হয়েছে। শক্তির ভারসাম্য আনতে এখন কাজ করা হচ্ছে যেটি এতদিন অসম্ভব ছিল। কারণ আওয়ামী লীগ ছিল একক শক্তিধর দল। এই শক্তির মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে একটাই রাস্তা ছিল আর তা হলো আওয়ামী লীগকে সাময়িকভাবে হটিয়ে দিয়ে বিরোধী পক্ষকে শক্তিশালী করা। প্রশাসন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সকল ক্ষেত্রে এরই মধ্যে রদবদল হয়ে গেছে। মোটামুটি একটা ভারসাম্য তৈরি হলে আবার আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনা হবে। এই মাঝখানের সময়ের মধ্যে নতুন বিশ্ব ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এজেন্ডাগুলোর তড়িঘড়ি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে যাতে পরবর্তী অশান্ত পরিবেশের মধ্যে আগুনে ঘি ঢালতে পারে। আর এসব বাস্তবায়ন শেষ হলেই সেই অদৃশ্য শক্তি গণতন্ত্রের নামে শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনবে। হ্যা, শেখ হাসিনা ফিরে আসবে জানি। বাকিটা আল্লাহু আলম। এটি নিয়ে তর্ক হতে পারে। গালমন্দ হতে পারে। তবে কুশিলবদের হিসাব ধরতে পারলে এটা বের করা সহজ যে, ডিপপুলেশন এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য শেখ হাসিনার ফিরে আসা তাদের কাছে অত্যন্ত জরুরী। কারণ আওয়ামী লীগের এই মূহুর্তে আর এমন কোন নেতৃত্ব নেই যার জন্য সমর্থকরা পূর্ণ আবেগ নিয়ে ঝাপিয়ে পরতে পারে। বিরোধী পক্ষের যেমন আবেগ ও ক্ষোভ। আওয়ামী লীগও ফিরবে আবেগ ও ক্ষোভ নিয়ে। চরম অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে কাজে লাগাবে কুশিলবরা। ফলাফল ডিপপুলেশন। আড়ালে শয়তানের হাততালি।

দ্যা ইকনোমিস্ট পত্রিকায় শুধু খবর প্রকাশিত হয়না। আগামীতে ঘটবে এমন বহু ঘটনার আলামত আকার ইঙ্গিতে প্রকাশ করা হয়। সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে নাটকের পরবর্তী পর্বে কি হতে পারে তা আগাম জানা সম্ভব। এই রিপোর্টের শিরোনামে গণতন্ত্রের নামে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার আলামত অত্যন্ত সুস্পষ্ট।

এরপর সরকারের পরিচিত মুখগুলো চলে গেলেও তাদের ছায়া রয়ে যাবে। এই মূহুর্তে এনজিওভিত্তিক বি-টিমের প্রস্তুতি লক্ষ্য করার মতো। এরাও এখন সেই কনট্রলড অপোজিশনের ভূমিকায় আছে। সরকারের কৌশলী সমালোচক এবং লোক দেখানো বিরোধীতা করে যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন রয়ে যাবে। পার্বত্য এলাকার উস্কে দেয়া আগুনে ঘি ঢালা হবে। আর অভ্যন্তরিন সংঘাতের জন্য পুরনো সেটআপ। ৭১ এর দুই পক্ষ। ফলাফল ডিপপুলেশন।

ইকনোমিস্ট পত্রিকার শিরোনাম থেকে এটা স্পষ্ট, পশ্চিমারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চায় না। এই মিডিয়ায় শুধু খবর প্রকাশিত হয়না। আগামীতে ঘটবে এমন বহু ঘটনার আলামত আকার ইঙ্গিতে প্রকাশ করা হয়। ব্যাপারটা এমন না যে, এসব খবর দেখে বৈশ্বিক রাজনীতি ও কূটনৈতিক সিন্ধান্ত নেয়া হয়; বরং মোড়লরা আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্যাপারে ইতিমধ্যে যেসব সিদ্ধান্ত নিয়েছে বা নেয়া হবে তা এ ধরনের মিডিয়ায় আগেভাগেই প্রকাশ করা হয়।

তারা জানে বৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাবে। অথবা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না যদি গণতন্ত্র ছেড়ে খেলাফতের পথে রওনা হয়ে যায়। অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না যদি আওয়ামী লীগ নাম পরিবর্তন করে আবার মুসলিম লীগ বা ইসলাম লীগ হয়ে যায়। এমন পরিণতি নিশ্চয় বুদ্ধিমান কুশিলবরা হতে দিবে না। এছাড়া শেখ হাসিনা ফিরে না আসলে নতুন যে শক্তির একচ্ছত্র আধিপত্ত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেটিও কুশিলবরা কখনও চায় না।

এর সাথে ইতিহাসের একটি বড় সমীকরণ মিলে যায়। আর তা হলো একদিকে জামায়াতে ইসলামী, তাদের মাথার উপর পাকিস্তান, তাদের উপর ছায়া হয়ে থাকবে আমেরিকাসহ পশ্চিমা বলয়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ, মাথার উপর ভারত, তাদের উপর ছায়া হয়ে অবস্থান নিবে রাশিয়া বলয়। ফ্রন্ট লাইনে এদেশের মানুষ। পিছনে ভারত পাকিস্তান। তাদের পিছনে রাশিয়া আমেরিকা। ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। এই ঘোলা পানিতে পরাশক্তিগুলো নিজ নিজ স্বার্থ উদ্ধার করবে। অস্ত্র বেচবে। ভূরাজনৈতিক গেম খেলবে।

প্রশ্ন হলো কেন বারবার এমন হচ্ছে? বারবার কেনো আন্দোলনের ফসল অন্যের ঘরে যায়? আসলে এখানেও আমাদের বুঝার ভুল। আন্দোলনের চূড়ান্ত মূহুর্তে শুধু সাধারণ জনগণকে সমৃক্ত করা হয়। কিন্তু আন্দোলনতো একমাসে হয়না। দশকের পর দশক ধরে পরিকল্পনা হয়। জুলাই আন্দোলনে কি সাধারণ মানুষ বা তাদের কোন প্রতিনিধি দশকের পর দশক ধরে সেসব পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ছিল? যারা ছিল ফসল আজ তাদের ঘরে। আমরা ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছি। কাজেই আবেগে একমাসে ফসল ঘরে তোলার স্বপ্ন না দেখে নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে আসহাবে কাহাফের যুবকদের মতো। কোন ব্যক্তি বা দলকে অন্ধ সাপোর্ট নয়; ইস্যু বুঝে সাপোর্ট হবে। মাসের পর মাস সাধনা করতে হবে। নিজেকে সংশোধন করতে হবে। তবেই আল্লাহর সাহায্য আসবে। তবেই দাজ্জালের কল্পিত নতুন বিশ্ব ব্যর্থ হবে।

বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া যায়, একটা ধ্বংস পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনা ঠিক থাকবে। কিন্তু গড়তে পারবে না। তবে আর একটি পর্ব বাকি আছে। সেটি হলো কালো ধোয়া। এটি মুসলমানদের উপর ফিতনার তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্ব। আগের লেখায় এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে। এই পর্বের পর থেকে শয়তানের পরিকল্পনাগুলো একে একে ব্যর্থ হতে শুরু করবে ইন শা আল্লাহ। কারণ আল্লাহ বলছেন – “তারা যে চক্রান্ত করেছিল তা ছিল সত্যিই ভয়ানক, কিন্তু তাদের চক্রান্ত আল্লাহ্‌র দৃষ্টির ভিতরেই ছিল, যদিও তাদের চক্রান্তগুলো এমন ছিল যে, তাতে পর্বতও টলে যেত। (অবস্থা যতই প্রতিকূল হোক না কেন) তুমি কক্ষনো মনে কর না যে, আল্লাহ তাঁর রাসূলগণকে দেয়া ওয়াদা খেলাপ করবেন, আল্লাহ মহা প্রতাপশালী, প্রবল প্রতিশোধ গ্রহণকারী।’’ [সূরা ইবরাহীম: ৪৬-৪৭]। আল্লাহ আরো বলছেন – আর আল্লাহ অবশ্যই বিশ্বাসঘাতকদের চক্রান্ত লক্ষ্যে পৌঁছতে দেন না। [সূরা ইউসুফ: ৫২]। ভুল না বুঝে থাকলে এটাই সেই সময় যখন তারা তাদের লক্ষ্যে পৌছানোর শেষ ধাপের আগ মূহুর্তে অবস্থান করছে। আর আল্লাহ বলছেন লক্ষ্যে পৌঁছাতে দিবেন না। কালো ধোয়ার পর্ব যেটিকে অধিকাংশ বিশ্লেষক নিউক্লিয়ার যুদ্ধ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই ফিতনা কোন মুসলিম দেশ দিয়ে শুরু হবে। কিছু গবেষণা থেকে পাওয়া যায় এটি ভারত উপমহাদেশের কোন মুসলিম দেশ থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অপর একটি লেখায় বিস্তারিত উল্লেখ করেছি। আর এই পর্ব শুরু মানে আল্লাহর প্রতিশোধ পর্বের শুরু। কারণ আল্লাহ বলছেন – “সম্ভবত তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের প্রতি দয়া করবেন; কিন্তু তোমরা যদি তোমাদের পূর্ব আচরণের পুনরাবৃত্তি কর; তবে আমিও (আমার শাস্তির) পুনরাবৃত্তি করব। আর জাহান্নামকে আমি করেছি কাফিরদের জন্য কারাগার।” [সূরা বণি ইসরায়েল: ৮]। এটা স্পষ্ট যে, সমগ্র বিশ্বে তারা যে নতুন শাসন ব্যবস্থা কায়েম করতে চায় তা চূড়ান্ত মূহুর্তে গিয়ে ব্যর্থ হবে। একাধিক উৎস থেকে জানা যায়, তাদের বার্থতার পর্ব শুরু হবে ভারত উপমহাদেশের কোন জায়গা থেকে। ইন শা আল্লাহ।

What do you think?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

GIPHY App Key not set. Please check settings

গাজওয়াতুল হিন্দ

গাজওয়াতুল হিন্দ, বাংলাদেশ প্রসঙ্গ এবং আমাদের করণীয়